কেরানীগঞ্জে জাহাজ তৈরির ডকইয়ার্ডে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আস্তানা

কেরানীগঞ্জে জাহাজ তৈরির ডকইয়ার্ডে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আস্তানা

Brand Bazaar

কেরানীগঞ্জের জাহাজ তৈরির ডকইয়ার্ডগুলোতে সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ ও অবৈধ অস্ত্রধারীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে। এলাকায় অস্ত্র ও মাদক ব্যবসার মোকামে পরিণত হয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন। এসব সন্ত্রাসীদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম বাবু নিজস্ব এক বাহিনী গঠন করেছে। তার বাহিনীর অত্যাচার জুলেমের বিরুদ্ধে কেউ কোনো প্রতিবাদ করতে পারছে না। গত সোমবার রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে সাইফুল ইসলাম বাবুকে গ্রেপ্তার করে। তার গ্রেপ্তারের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা আনন্দ উল্লাস করেছে বলে জানা গেছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসীরা পুলিশ, ডিবি ও র‌্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার কারণে এসব সন্ত্রাসীরা ওই এলাকায় গিয়ে নিরাপদে অবস্থা করছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। শুধু তাই নয়, এসব সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় ফ্রি স্ট্রাইলে চাঁদাবাজি, গুম-খুনের ঘটনা ঘটিয়ে আসছে। আর ডকইয়ার্ডগুলোতে দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্রের নিরাপদ ব্যবসারকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

কেরানীগঞ্জে জাহাজ তৈরির ডকইয়ার্ডে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আস্তানা
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কাউটাইল এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী সাইফুর রহমান ওরফে বাবু নামের এক শীর্ষ সন্ত্রাসী এলাকায় তার নিজস্ব বাহিনী গড়ে তুলেছেন। আর তার বাহিনীর সদস্যদের দিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে তুলে ডকইয়ার্ড এলাকায় নিয়ে মুক্তিপণ আদায় করছে। আর তাদের দাবিকৃত মুক্তিপণের টাকা দিতে কেউ ব্যর্থ হলে তাকে পিটিয়ে হত্যার পর বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। আর তার বাহিনীর সদস্যরা হলেন, রাসেল, নুর হোসেন ওরফে পলাশ, মো. সাগর অন্যতম বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, মেসার্স শাহ পরান ডকইয়ার্ডের মালিক মো. আমিনুল ইসলাম ওরফে সুমনের অফিস কক্ষে গত ১ নভেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে সন্ত্রাসী সাইফুল ইসলাম বাবু ও তার লোকজন অস্ত্রের মুখে প্রবেশ করে। এরপর তার কাছ থেকে ৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, ৮৩ হাজার ৯শ টাকা দামের একটি মোবাইল সেট, আরো তার সঙ্গে থাকা ১০ হাজার টাকা ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয়। এসময় সন্ত্রাসীরা সুমনকে মারধর করে তাকে তুলে নিয়ে যায়। পরে অজ্ঞাতনামা জায়গার একটি রুমে নিয়ে আটকের পর তাকে আরো পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। এসময় তার মুখের ৬টি দাঁত ভেঙে যায়। একপর্যায়ে তাকে মৃত ভেবে তাকে নির্জন এলাকায় ফেলে যায়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আমিনুল ইসলাম সুমনকে উদ্ধারের পর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের একটি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল ও স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি বলে সুমনের পরিবার অভিযোগ করেছেন। পরে স্থানীয় সংসদ ও মন্ত্রী বিষয়টি বিচার করে দেওয়ার জন্য উভয় পক্ষকে ডাকেন। কিন্তু সেখানে সন্ত্রাসী বাবু ও তার লোকজন উপস্থিত হয়নি। পরে সুমনের বাবা এ বিষয়ে আদালতে মামলা নম্বর- ৫৩৪৬(০)/১ দায়ের করেন। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ মামলার প্রধান আসামি সাইফুল ইসলাম বাবুকে মঙ্গলবার গ্রেপ্তার করেছে। স্থানীয়রা জানান, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চিতাখোলা এলাকায় বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় শিশু অপহরণ ও হত্যামামলার আসামি নিহত হয়। গত বছর নিহত সন্ত্রাসীর নাম মোতাহার।

এই মোতাহার কেরানীগঞ্জে শিশু আবদুল্লাহ হত্যামামলার প্রাধান আসামি ছিল। যার বাড়ির ছাদে আবদুল্লাহর লাশ পাওয়া গিয়েছিল। বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় মোতাহারের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে কাউটাইল এলাকা ও মুগারচর এলাকার বাসিন্দারা দফায় দফায় মিষ্টি বিতরণ করেন। এছাড়াও তারা আনন্দ মিছিল বের করে মোতাহারের কুশপুত্তলিকা দাহ করেছিল। তার মৃত্যুর পর সাইফুল ইসলাম বাবু নতুন একটি বাহিনী গঠন করে এলাকায় তা-বের রাজত্ব কায়েম করেছে। তার গ্রেপ্তারের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা আনান্দ উল্লাস করেছে বলে স্থানীয় ও নির্যাতিত ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment