দোহারে মাধ্যমিক শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম ও দূর্নীতির তদন্তে প্রশাসন

কোচিং বানিজ্য,এসএসসি ফরমপূরনে অনিয়ম ও দূর্নীতি

দোহারে মাধ্যমিক শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম ও দূর্নীতির তদন্তে প্রশাসন
মাহাবুবুর রহমান টিপু,দোহার(ঢাকা)প্রতিনিধি:
ঢাকার দোহার উপজেলায় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সভাপতির বিরুদ্ধে অনিয়ম এবং এস.এস.সি পরীক্ষায় ফরম পূরনে অকৃতকার্যদের কাছ থেকে অনৈতিক লেনদেনের মাধ্যমে উত্তীর্ণ করার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করলে তার তদন্তে আসেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.লিয়াকত হোসেন ও সংশ্লিষ্ট এরিয়ার চেয়ারম্যানবৃন্দরা।
কোচিং বানিজ্য,এসএসসি ফরমপূরনে অনিয়ম ও দূর্নীতিজানা যায়,গত ০২ ডিসেম্বর শনিবার উপজেলার নারিশা ইউনিয়নের ইসলামাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের মুল ফটকের সামনের রাস্তায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো.আনোয়ার হোসেন,ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আজিজুর রহমানের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও এস.এস.সি নির্বাচনী পরীক্ষায় ৬ বিষয়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীকে অর্থনৈতিক লেনদেনের মাধ্যমে উত্তীর্ণ করার প্রতিবাদে এ মানববন্ধন পালন করলে তার ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় সংবাদটি প্রকাশিত হলে বিষয়টি নজর কাড়েন উপজেলা প্রশাসনের। দোহার উপজেলা পরিষদের সাক্ষরিত চিঠির ক্ষমতাবলে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।তাতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.লিয়াকত হোসেনকে প্রধান করে আরো দুই ইউপি চেয়ারম্যান মো.সালাউদ্দিন দরানী ও সুরুজ বেপারীকে সদস্য করে তদন্তের নির্দেশ মোতাবেক গতকাল বৃহস্পতিবার তদন্তে আসেন শিক্ষা কর্মকর্তা মো.লিয়াকত হোসেন ও দুই সদস্যবৃন্দ।এ সময়ে শিক্ষার্থীদের ও অভিভাবকের সাক্ষ্য প্রমানে তদন্ত কমিটি প্রধান শিক্ষক নুরে আলম সিদ্দিকীর ও পরিচালনা কমিটির নির্বাহি সদস্যের জড়িত থাকার সত্যতা পেয়েছে।বিদ্যালয়ের পাশেই পরিচালনা কমিটির প্রভাবশালী সদস্য আ.মতিনের তত্বাবধায়নে ইজি ম্যাথড টিউটোরিয়াল কোচিং সেন্টার নামে গড়ে উঠেছে বিশাল কোচিং সেন্টার।সেখান থেকে বিভিন্ন সুবিধা নিয়ে থকেন পরিচালনা পর্যদ বলে জানা যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের এক তৃতীয় শ্রেনীর কর্মচারী জানান,ম্যানেজিং কমিটি ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আজিজুর রহমান প্রধান শিক্ষকের সাথে আতাত করে এই সুনামধন্য স্কুলটি ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে এনে দাঁড় করিয়েছে।যার প্রতিবাদে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহল আশা করেন বিষয়টিকে শিক্ষা মন্ত্রনালয় সহ উপজেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় সু-ব্যবস্থা নিবেন। তদন্ত কমিটি প্রধান শিক্ষক মারফত ঘটনার জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমুলক প্রত্যায়নপত্র গ্রহন করেন বলে জানান,উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা মো.লিয়াকত হোসেন।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. ডলার মাহমুদ জানান,সভাপতি এবং প্রধান শিক্ষক ৬ বিষয়ে অকৃতকার্যদের ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ায় আমাদের এই মানববন্ধন করা হয়েছিল।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক নুরে আলম সিদ্দিকী সমকালকে জানান,একটি মেয়ে শারীরিক অসুস্থতার কারনে পরীক্ষা দুইটি পরীক্ষা দিতে পারেনি।পরবর্তীতে কমিটির সকলের অনুরোধে তাকে বিশেষ বিবেচনায় পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়।এখানে কোন অনিয়ম হয়নি।কোচিং বানিজ্যে জড়িত এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,ম্যানেজিং কমিটির প্রভাবশালী সদস্যেও মালিকানায় চলছে কোচিং সেন্টার।আমার কি করার আছে বলেন।
এ বিষয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্যদের সদস্য ও ইজি ম্যাথড টিউটোরিয়াল কোচিং সেন্টারের মালিক আ.মতিনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি সমকালকে জানান,শিক্ষা মন্ত্রানালয় কতৃক কোচিং সেন্টার বন্ধে যে আইন পাশ করা হয়েছে তা আমি ভালোভাবেই জানি।প্রশাসনের কেউ ডাকলে তা পরে দেখা যাবে।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সদস্য ও ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আজিজুর রহমান সাথে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে দোহার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.লিয়াকত হোসেন সমকালকে জানান,অনিয়মের তদন্ত চলছে।আগামী রোববার উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা কেএম আল-আমিন সাহেবের কাছে লিখিতভাবে সব উপস্থাপন করা হবে।প্রমান পাওয়া গেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে.এম. আল-আমীন বলেন, বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।তদন্তে প্রমান পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দোহার,ঢাকা।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment