স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করায় ফাঁড়ির ১২ পুলিশ প্রত্যাহার

স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করায় ফাঁড়ির ১২ পুলিশ প্রত্যাহার

খুলনায় বটিয়াঘাটা উপজেলায় কয়েকদিন ধরে বাইনতলা ফাঁড়ির ১২ জন পুলিশ সদস্য এক স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করে আসছে। গতকাল মঙ্গলবার পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীর ভাই বাইনতলা ফাঁড়িতে গিয়ে প্রতিবাদ করে। প্রতিবাদের সময় পুলিশ সদস্যরা স্কুলছাত্রীর ভাইকে বাইনতলা ফাঁড়িতে নিয়ে মারধর করে হাজতে আটকে রাখে। এ প্রতিবাদের পর ওই ফাঁড়ির ১২ পুলিশ সদস্যের সবাইকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এলাকাবাসী সূত্র বলেছে, বটিয়াঘাটার আমীরপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করতেন বাইনতলা ফাঁড়ির কয়েকজন কনস্টেবল। তাঁদের মধ্যে কনস্টেবল মো. নাঈম গতকাল সকাল ৯টার দিকে বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে ওই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করেন। ওই ছাত্রী বাইনতলা মোড়ে তার ভাইয়ের দোকানে গিয়ে ঘটনা জানায়। ভাই উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করলে পুলিশ তাঁকে ফাঁড়িতে ধরে নিয়ে শারীরিক নির্যাতনের পর হাজতে আটকে রাখে। খবর পেয়ে গ্রামবাসী ফাঁড়িতে গেলে পুলিশের সঙ্গে কয়েকজনের ধস্তাধস্তি হয়। গ্রামবাসী ফাঁড়ি ঘিরে রাখেন।

স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করায় ফাঁড়ির ১২ পুলিশ প্রত্যাহার

আমীরপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান গোলদার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান এবং বটিয়াঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) ঘটনা জানান। ওসি মোজাম্মেল হক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে ঘটনাস্থলে যান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। খুলনার পুলিশ সুপার ঘটনা জানার পর দুপুরে কনস্টেবল মো. নাঈম, মামুন, রিয়াজ, আবির ও জাহীদকে ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। পরে বিকেলে ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহকারী উপপরিদর্শক তারিকুজ্জামানসহ বাকি সাত সদস্যকেও প্রত্যাহার করা হয়।

ওই ছাত্রীর বাবা বলেন, বিদ্যালয়ে যাতায়াতের পথে মেয়েকে প্রায়ই ওই কনস্টেবল উত্ত্যক্ত করতেন। গতকালও উত্ত্যক্ত করায় তাঁর ছেলে প্রতিবাদ করলে পাঁচ কনস্টেবল তাকে বেদম মারধর করে আহত করেছেন। ছেলেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকাবাসী বিস্মিত।

বটিয়াঘাটা থানার ওসি মোজাম্মেল হক বলেন, উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ সত্য নয়। ওই মেয়ের ভাই পুলিশের সঙ্গে তর্ক করায় তাঁকে ফাঁড়িতে নিয়ে মারধর করা হয়েছে। এ ব্যাপারে তাঁদের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিয়েছে।

খুলনার পুলিশ সুপার মো. নিজামুল হক মোল্যা, অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ফাঁড়ির সব পুলিশ সদস্যকে খুলনা পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাঈমুল হককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment