মহেশপুরে নিরপরাধ কৃষককে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ

মহেশপুরে নিরপরাধ কৃষককে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ

ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
মহেশপুরে ঘরে ইয়াবা রেখে এক নিরপরাধ চাষিকে আটক করার অভিযোগ উঠেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। ‘অভিযানে’ নেতৃত্ব দেওয়া অধিদপ্তরের পরিদর্শক অবশ্য বলছেন, শত্রুতাবশত কেউ যদি ওই ব্যক্তির ঘরে ইয়াবা রেখে থাকে, তাহলে তাদের কিছু করার নেই। বুধবার (১৭ই জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঝিনাইদহের একটি টিম মহেশপুর উপজেলার শ্যামকুড় ইউনিয়নের টাঙ্গাইলপাড়ায় অভিযান চালায়। ওই পাড়ার বাসিন্দা খলিলুর রহমানের (৩৩) ঘর থেকে ইয়াবা উদ্ধার হয় বলে তাদের দাবি। কিন্তু জনপ্রতিনিধিসহ এলাকাবাসী বলছেন, খলিলুর রহমান নিরপরাধ। তাকে ফাঁসানো হয়েছে।
মহেশপুরে নিরপরাধ কৃষককে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগপ্রতিবেশীরা জানান, টাঙ্গাইলপাড়ার মৃত আইনুদ্দিনের ছেলে খলিলুর রহমান মাঠ থেকে বাড়িতে ভাত খাওয়ার জন্য আসেন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে। এসময় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সোর্স পরিচয়দানকারী জলিলপুর গ্রামের রাজীবকে নিয়ে ঝিনাইদহ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন ও কয়েকজন পুলিশ সদস্য তার বাড়িতে গিয়ে হাজির হন। তারা ঘর তল্লাশি করতে চান। এ সময় সোর্স পরিচয়দানকারী রাজীবসহ কয়েকজন খলিলুর রহমানের ঘরে ঢুকে জানালার পাশ থেকে একটি ইয়াবার পোটলা বের করে নিয়ে আসেন। পরে সেটি এলাকাবাসীর সামনে খুলে দেখান। পোটলাটিতে ৩০ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট ছিল।

শ্যামকুড় গ্রামের ডিবি ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কথিত সোর্স ওয়াসিম বলেন, ‘আমি আগে সোর্স হিসেবে কাজ করতাম। এখন আর করি না। তবে খলিলদের আমরা ছোটবেলা থেকেই চিনি। তাদের পরিবারের কেউ মাদকে আসক্ত না। এমনকি খলিলুর রহমান বিড়ি-সিগারেটও খায় না। আমাদের এলাকার বাক্কার ছেলে জাকির ও খুশোর ছেলে রহমান এলাকায় মাদকের রমরমা ব্যবসা করছে। তাদের না ধরে সোর্স রাজিব কেন খলিলুর রহমানকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকজন দিয়ে ধরিয়ে দিলো তা আমার জানা নেই।’

ইউপি সদস্য আব্দুল করিম জানান, খলিলুর রহমান নিরপরাধ। অথচ ঘরে ইয়াবা দিয়ে তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া দুঃখজনক।

এদিকে, আটক খলিলুর রহমানকে বিকেলে নিয়ে যাওয়া হয় মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল ইসলামের অফিস কক্ষে। সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে খলিলুরকে সাজা দেওয়ার চেষ্টা করেন কর্মকর্তারা। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম সম্মত হননি। উপায়ন্তর না দেখে মাদকদ্রব্যের কর্মকর্তারা পরে তাকে মহেশপুর থানায় সোপর্দ করে একটি মামলা করেন।

এই বিষয়ে ঝিনাইদহের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খলিলুর রহমানের বাড়িতে যাই। পরে তার ঘর তল্লাশি করে খাটের বালিশের নিচ থেকে ৩০ পিচ ইয়াবা উদ্ধার করি।’

এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘খলিলুর রহমানের সাথে প্রতিবেশী বা বাড়ির কারোর শত্রুতার কারণে ঘরে ইয়াবা দিয়ে রেখেছে কিনা তা আমাদের জানা নেই।’

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment