সাদুল্যাপুর-নলডাঙ্গা পাকা সড়কটি এখন মৃত্যুর কুপ

সাদুল্যাপুর-নলডাঙ্গা পাকা সড়কটি এখন মৃত্যুর কুপ

তোফায়েল হোসেন জাকির, গাইবান্ধা:-
দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে সংস্কার ও মেরামত না করায় মৃত্যুর কুপে ফাঁেদ পরিনত হয়েছে গাইবান্ধার সাদুল্যাপুুর উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ সাদুল্যাপুর- নলডাঙ্গা- সড়কটি। উপজেলার নলডাঙ্গা ও তার পাশর্^বতী অঞ্চলের মানুষজন দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক পথে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম এই সড়কটি। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নেক নজরের অভাবে গুরুত্বপূর্ণ পাকা সড়কটির দীর্ঘদিন ধরে কোন রকম সংস্কার কিংবা মেরামত না করায় নলডাঙ্গা হইতে কান্তনগর পর্যন্ত প্রায় ৫ কিঃমিঃ সড়কের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য খানা খন্দে ভরে গেছে।
সাদুল্যাপুর-নলডাঙ্গা পাকা সড়কটি এখন মৃত্যুর কুপ  সড়কটি এখন বেহালদশা বিরাজ করায় সর্বসাধারণের চলাচলে অবর্ণণীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।  ভূক্তভোগিদের নিকট থেকে জানা গেছে, এ উপজেলার নলডাঙ্গা সহ পাশর্^বর্তী অঞ্চলের বিশাল জনগোষ্টি সড়ক পথে রাজধানী ঢাকা, জেলা শহর গাইবান্ধা ও উপজেলা শহর সাদুল্যাপুর সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে থাকেন। এছাড়া প্রতিদিন সড়কটি দিয়ে হাজার হাজার পথচারী এবং কোমলমতি স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থী চলাচল করে থাকে। বর্তমানে সড়কটির অধিকাংশ স্থানে কার্পেটিং ও খোয়া উঠে গিয়ে বিশাল বিশাল গতের্র সৃষ্টি হয়েছে।  এ পরিস্থিতিতে সড়কটি দিয়ে পাঁয়ে হেঁটে চলাচল করা অনেকটা দুস্কর হয়ে পড়ছে। সড়কটি দিয়ে পাঁয়ে হেঁটে চলাচল করতে গিয়ে অনেকে পথচারী ও শিক্ষার্থী খাদে পড়ে রক্তাত্ত জখম হয়েছেন। এ অবস্থায় সড়কটি এখন কারও জন্যই নিরাপদ নয় বলে স্থানীয়রা জানান। এর মধ্যেও জনগুরুত্বপূর্ণ ব্যস্ততম সড়কটি দিয়ে দিবারাত্রি বাস,কোচ, ট্রাক, মাইক্রেবাস,সিএনজি, অটোবাইক, ব্যাটারী চালিত ভ্যান,মোটর সাইকেল ও বাইসাইকেল সহ নানা ধরনের হালকা ও ভারী যানবাহন ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে চলাচল করছে। কিন্ত তবুও মানুষজন প্রয়োজনের তাগিদে নিরূপায় হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এসব যানবাহন যোগে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করছেন। এসব যানবাহনে চলাচল করতে গিয়ে তীব্র ঝাঁকুনিতে নারী শিশু সহ অনেক যাত্রী সাধারন ছিটকে রাস্তার উপর পড়ে গিয়ে মারাতœক দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। এভাবে প্রতিনিয়তই সড়কটিতে ঘটছে ছোট খাট দূর্ঘটনা। ভ্যান চালক মহির উদ্দিন, রফিকুল ইসলাম ও আঃ রহমান জানান অনেক যাত্রী তার গন্তব্য স্থলে তাড়াতাড়ি পৌঁছতে আমাদেরকে দ্রুত গাড়ী চালাতে বলেন । এ অবস্থার মধ্যে জোরে ভ্যান চালালেই যে কোন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ জন্য জোরে শোরে গাড়ী চালানো সম্ভব হয় না। এ নিয়ে প্রায়ই যাত্রীদের সাথে তুমুল বাকবিতন্ডা হয় বলে তারা জানান। তারা আরও জানান সড়কটির এমন অবস্থাতে আমরা খুব ভয়ে ধীরে ধীরে সাবধানতার সাথে গাড়ী চালাই।
নলডাঙ্গা থেকে ঢাকা গামী বাস কোচের চালক রওশন মিয়া ,রফিক, জিন্নাহ ও আ: মান্নান বলেন, কান্তনগর থেকে নলডাঙ্গা পৌঁছতে আগে ৮/১০ মিনিটের বেশী সময় লাগতো না। কিন্তু বর্তমানে সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গাচূড়া হওয়ায় গাড়ী স্বাভাবিক গতিতে চালানো সম্ভব হয় না। ফলে ১০ মিনিটের রাস্তা এখন প্রায় আধা ঘন্টা সময় লাগছে বলে তারা জানান। সিএনজি চালক আ: সামাদ,শৈলান এবং অটোচালক নিয়াকত আলী ও মিজান জানান সড়কটির বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের কারণে অনেক কষ্ট করে গাড়ী চালাতে হচ্ছে। তারপরেও কোন সময় গাড়ী একটু গর্তে পড়লে ঝাঁকুনিতে যাত্রীরা আমাদের উপর ভীষন ভাবে ক্ষেপে উঠেন। এছাড়া সড়কটির নাজুক পরিস্থিতিতে বিশেষ করে মুমুর্ষ কোন রোগিকে এ্যাম্বুলেন্সে কিংবা অন্য কোন যানবাহন যোগে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত কোন হাসপাতালে নিতে গিয়ে অসহনীয় ঝাকুনিতে রোগির যেন আরও বারোটা বেজে যায় বলে জানা গেছে। বিশেষ করে বর্ষাকালে সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কটির সৃষ্ট খাদে হাটু পানি জমে জলবদ্ধতায় সড়কটি দিয়ে চলাচল আরও যেন দুরূহ হয়ে পড়ে। এদিকে স্থানীয় একটি মহল আক্ষেপ করে বলেন, সড়কটির এমন দু:রবস্থার বিষয়টি এলাকার জনপ্রতিনিধিরা জেনেও তারা অদ্যবধি এ ব্যাপারে কোন রকম কার্যকরী ব্যবস্থা না নেয়ায় আমরা হতাশ হয়ে পড়েছি। অনেকেই আবার এলাকার রাস্তা ঘাটের উন্নয়ন নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ভুমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলছেন । ভূক্তভোগিদের অভিযোগ সড়কটি এখন মৃত্যুর ফাঁদে পরিণত হলেও সংশ্লিষ্টজনদের এ নিয়ে কোন মাথা ব্যাথা নেই।
সড়কটির এমন করুন দৃশ্য তারা দেখে শুনেও না দেখার ভান করায় সর্বসাধারনের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বিদ্যমান প্রসঙ্গ নিয়ে সাদুল্যাপুর উপজেলা প্রকৌশলী মাজহারুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সড়কটি মেরামতের জন্য বিদেশী প্রজেক্ট ধরা হয়েছে। ইতিমধ্যে অনুমোদন সাপেক্ষে বরাদ্দের জন্য শর্ট লিষ্টে কাগজ পত্র ঢাকায় পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

গাইবান্ধায় একাধিক মামলার পলাতক আসামী গ্রেপ্তার
গাইবান্ধা প্রতিনিধি ঃ গাইবান্ধা জেলার একাধিক মামলার পলাতক আসামী খয়রাজ্জামান মিয়া ওরফে গালকাটা খয়রাকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পলিশ। সে বনগ্রাম ইউনিয়নের দক্ষিণ ইসবপুর গ্রামের মৃত্যু ইয়াকুব আলীর ছেলে। বুধবার বিকেলে ওই ইউনিয়নের ইদ্রাকপুর বাজার থেকে খয়রাজ্জামানকে গ্রেপ্তার করেন।
সাদুল্যাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বোরহান উদ্দিন জানান, আটক খয়রাজ্জামনের বিরুদ্ধে দুটি মামলার গ্রেপ্তারী পরোয়ানা ছিল এবং গত ২৩ নভেম্বর রাতে সাদুল্যাপুরের উত্তর কাজিবাড়ী সন্তোলা গ্রামের সিআইডি’র এএসআই শাহারুল আলমের বাসা ডাকাতি সংগঠিত মামলার সন্দেহভাজন আসামী। খয়রাজ্জামান দীর্ঘদিন পলাতক থাকায় বুধবার বিকেলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment