বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শুনশান নীরবতা

বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শুনশান নীরবতা

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়কে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক ধড়পাকড়ে নেতা-কর্মী শূন্য হয়ে পড়েছে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়। শুধু কেন্দ্রীয় কার্যালয়ই নয়, রাজপথেও দেখা যাচ্ছে না দলটির নেতাকর্মীদের। পূর্বের মতো নেতা কর্মীদের স্বাভাবিক চলাচল নেই কার্যালয়টিতে। নেতাকর্মী শুন্য তালাবদ্ধ কার্যালয়ে নেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও। সরেজমিন গিয়ে নেতাকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্যকে দেখা যায়নি সেখানে। শুনশান নীরবতা লক্ষ্য করা গেছে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। শুধু কার্যালয়ে নয়, রাজপথের কোথাও দেখা মিলছে বিএনপি নেতাকর্মীদের। দলের চেয়ারপারসনের সংকটময় এমন দিনে রাজপথে নেই নেতাকর্মীরা। আটক ও গ্রেপ্তার আতঙ্কে রাজপথ ছেড়ে মুখঢাকা দিয়েছেন দলটির নেতা কর্মীরা। যদিও দলটির বিভিন্ন সূত্র দাবি করছে গ্রেপ্তার এড়াতেই তাদের নেতাকর্মীরা রাজপথ ছেড়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। পূর্বের বিভিন্ন রাজনৈতিক ইস্যু থেকে দেখা যায়, দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিজেদের মধ্যেই দলের মালিকানা দাবি করে আসল ও নকল বিএনপি দুটি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষ হলেও কার্যালয়টি থাকতো নেতা-কর্মীদের পদচারণায় মুখোর। কিন্তু দলটির চেয়ারপারসনের এমন ক্রান্তিকালে আসল ও নকল বিএনপির কেউই নেই রাজপথে কিংবা নিজেদের কার্যালয়ে। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, রাজপথের গুরুত্বপূর্ণ স্থান গুলোতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। যাতে করে বিএনপি চেয়ারপারসনের দুর্নীতি মামলার রায়কে কেন্দ্র করে কেউ কোনো ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে থাকলেও বিএনপির নেতাকর্মীরা গ্রেপ্তার ও আটকাতঙ্ক এড়াতে আরও সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। তাদের এমন অবস্থানে বলা চলে আজ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এমন কোনো ঝামেলা মোকাবেলা করতে হবে না। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, কার্যালয়টির নিচে প্রধান ফটকে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। কার্যালয়ের সামনে যদিও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্যকে দেখা যায়নি, দেখা যায়নি দলটির কোনো নেতাকর্মীকেও। তবে তালাবদ্ধ কার্যালয়ের ভেতরে রয়েছেন দলের সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। কার্যালয়ের নিচে দাঁড়িয়ে ভবনে লাগানো পেপার পড়ছেন নাজিম উদ্দিন নামের একজন। তিনি আমার সংবাদকে বলেন, দলের নেত্রীর এমন বিপর্যয়ের দিনে নেতাকর্মীরা রাজপথে নেই, এটা লজ্জাস্কর। তাদের এমন আচরণে বুঝাই যাচ্ছে আজও তারা রাজপথে নামতে সাহস পাবে না। তিনি বলেন, বিএনপির সব নেতাকর্মীকেই তো আর গ্রেপ্তার করা হয়নি। যাদের আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা ছাড়াও আরও যারা রয়েছেন তারা কোথায়? তাদের থেকে তাদের নেত্রীর জন্য তো কোনো আন্দোলন সংগ্রাম করতে দেখা যাচ্ছে না। দলটির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, গ্রেপ্তার এড়াতে দলীয় কার্যালয়ে নেতা কর্মীদের আনাগোনা কমলেও সাংগঠনিক কাজে কোনো ব্যাঘাত ঘটছে না। নেতাকর্মীদের পদচারণা কমে যাওয়া দলের কৌশলগত অবস্থানের একটি অংশ বলে জানান তিনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা দুর্নীতি মামলার রায় ও পুলিশের গাড়িতে হামলার ঘটনায় এ অভিযান চালানো হচ্ছে। অন্যদিকে, দলের নেতাদের দাবি, কৌশলগত কারণেই কার্যালয়ে আসছে না নেতাকর্মীরা। এ বিষয়ে পুলিশের নব নিযুক্ত মহাপরিদর্শক জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রায়কে কেন্দ্র করে জনগণের মধ্যে ভীতি ও আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। তবে আশ্বস্ত করছি ভীত হবেন না, ৮ ফেব্রুয়ারি কিছুই হবে না। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment