দিনাজপুরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের হিড়িক

দিনাজপুরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের হিড়িক

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ছোট যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে। কোথাও কোথাও ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে উত্তোলন চলছে বালু। এসব বালু নদীর পাশে স্তূপ করে রেখে দেধারছে বিক্রয় করছে। বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে ফুলবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গড়ে তোলা হয়েছে বালু মজুদ ও বিক্রির ঘাট। ঘাটের বালু বহনকারী ট্রাক্টরগুলো বেপরোয়াভাবে যাতায়াত করায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ গ্রামীণ অবকাঠামোর চরম ক্ষতি হচ্ছে। সেই সাথে বেপরোয়া ভাবে চলাচলকারী ট্রাক্টরের কারণে সড়কগুলো চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এক শ্রেণির বালু খেকো মানুষের কারণে সৃষ্টি হয়েছে এ পরিস্থিতি।
দিনাজপুরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের হিড়িকউপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, শিবনগর ইউনিয়নের ছোট যমুনা নদীর তীরবর্তী বেলতলী ও গোপালপুর নামক দুটি স্থান বালু মহালের জন্য নির্দিষ্ট করে আতিয়ার রহমান মিন্টুকে সরকারি ভাবে ঘাট ইজারা প্রদান করা হয়েছে। শর্তানুযায়ী ইজারাকৃত নির্দিষ্ট ঘাট ব্যতীত অন্য স্থানে বালু উত্তোলন সম্পূর্ণ অবৈধ। অভিযোগ উঠেছে, সরকারি নিয়মনীতি না মেনে ইজারাদার আতিয়ার রহমান মিন্টু নির্দিষ্ট স্থান থেকে বালু উত্তোলনের পাশাপাশি তার নেতৃতে উপজেলার দৌলতপুর,খয়েরবাড়ী ইউনিয়নসহ ছোট যমুনা নদীর বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। এমনকি ক্ষোদ ইজারাদার কর্তৃক সরকারি ডাককৃত ঘাট থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়েও বালু তোলার অভিযোগ রয়েছে।অভিযোগ উঠেছে, খয়েরবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এনামুল হক ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে নদীর পাশে স্তূপ করে রেখে দেধারছে বিক্রয় করছে। বারাই পাড়া গ্রামের মতি ও তোজাম্মেল হাজী নামে দু’জনও বারাইপাড়া ঘাট থেকে অব্যইধভাবে বালু তুলছে।

এছাড়াও ইউনিয়নের জানিপুর বাঁধ সংলগ্ন যমুনা নদীর তীর ঘেঁষে একটি বিশাল এলাকায় গর্ত করে বালু উত্তোলন করায় হুমকির মুখে পড়েছে বাঁধটি। এদিকে নদী থেকে যত্রতত্র বালু উত্তোলনের ফলে একদিকে যেমন কৃষকের কৃষি জমি নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে, অন্যদিকে বালু বোঝাই ট্রাক্টর চলাচল করায় গ্রামীণ রাস্তাঘাট ভেঙে যাতায়াতের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।অবৈধ বালু উত্তোলনকারী বারাই পাড়া গ্রামের মতি’র সাথে কথা হলে তিনি বলেন, শুধু আমরাই নয় আরো অনেকেই এভাবে বালু তোলে। ঘাট মালিক আতিয়ার রহমান মিন্টু’র সাথে কথা বলে কন্ট্রাকের মাধ্যমে বালু তুলছি। তিনি আমাদেরকে বালুতোলার বিষয়ে কমপ্রমাইস করেছে।বালু ইজারাদার আতিয়ার রহমান মিন্টুর সাথে কথা হলে তিনি জানান, নদীতে পানি থাকায় বালু তোলা সম্ভব হচ্ছে না সে কারণেই মেশিন দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। তবে সারা দেশে মেশিন দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে অন্যরা যদি তুলতে পারে তাহলে আমরা কেন পারবো না। নির্দিষ্ট ঘাট ছাড়া অন্য কোথাও যারা বালু তুলছে তারা মিথ্যা কথা বলেছে তাদের সাথে আমার কোনো যোগাযোগ নেই। তাদের কে অনেক বার বাধা প্রদানের জন্য পুলিশ পাঠানো হয়েছে তারা শুনছে না।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুস সালাম চৌধুরীর বলেন, ইজারাকৃত নির্দিষ্ট ঘাট ব্যতীত অন্য জায়গা থেকে বালু উত্তোলন সম্পূর্ণ অবৈধ। ইজারাদার নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া অন্য স্থানে বালু উত্তোলন করতে পারবে না। এ বিষয়টি অনেকেই জানিয়েছে। আমরা এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ পাঠানো হচ্ছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment