বৃষ্টি হত্যার ২৯ দিনেও গ্রেফতার হয়নি কেউ

বৃষ্টি হত্যার ২৯ দিনেও গ্রেফতার হয়নি কেউ

রাজবাড়ীর কালুখালীতে ৭ম শ্রেণির মাদ্রাসা ছাত্রী বৃষ্টি হত্যার ২৯দিনেও গ্রেফতার হয়নি কেউ। গত ১৫ জানুয়ারি বিকেলে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে মারপিটের পর মুখে বিষ ঢেলে তাকে হত্যা করা হয়।নিহত বৃষ্টি কালুখালী উপজেলার মৃগী ইউনিয়নের বাজেগড়ীয়া গ্রামের আতিয়ার রহমানের মেয়ে।

বৃষ্টি হত্যার ২৯ দিনেও গ্রেফতার হয়নি কেউআতিয়ার রহমান জানান, বৃষ্টি মৃগী আরকান্দি দাখিল মাদরাসায় ৭ম শ্রেণিতে পড়তো। মাদরাসায় সময় একই ক্লাসের ছাত্রী পার্শ্ববর্তী খড়খড়িয়া গ্রামে নদীয়া খাতুনের সাথে তার বান্ধবীর সম্পর্ক গড়ে উঠে। সে কারণে বৃষ্টি মাঝে মধ্যে বান্ধবী নদীয়ার বাড়ীতে বেড়াতে যেত। এ সুযোগে নদীয়ার ফুফাতো ভাই রাসেল বৃষ্টিকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়াসহ বিয়ের প্রলোভন দেখাতো এবং প্রায়ই মাদরাসায় যাতায়াতকালে বৃষ্টিকে বিরক্ত করতো।তিনি বলেন, আমি বিষয়টি জানার পর রাসেলের অভিভাবকদের জানাই। এতে রাসেল আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং বৃষ্টির ক্ষতি করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। এ আক্রোশে গত ১৫ জানুয়ারি বিকেলে মাদরাসা থেকে নদীয়াকে দিয়ে রাসেল কৌশলে বৃষ্টিকে তার বাড়ীতে নিয়ে যায়। বাড়ীতে নেয়ার পর নদীয়া বৃষ্টিকে রাসেলের রুমে ঢুকিয়ে দিতেই রাসেল ভেতর থেকে রুমের দরজা বন্ধ করে দেয়। এরপর রাসেল তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে সে চিৎকার করে এবং সমস্ত ঘটনা এলাকার সবাইকে জানিয়ে দিবে বলে প্রকাশ করে। আর এতেই কাল হয়ে দাড়ায় বৃষ্টির।

বৃষ্টির বাবা বলেন, রাগে ও ক্ষোভে রাসেল পরিবারের লোকদের সহযোগিতায় বৃষ্টিকে মারপিট করে। এতে সে নিস্তেজ হয়ে পড়লে অবস্থা বেগতিক দেখে তার মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে তারা। এরপর দিনের আলো নিভে অন্ধকার হয়ে আসলে সন্ধ্যা ৭টার দিকে তারা তাদের বাড়ীর পাশে ক্ষেতের মধ্যে বৃষ্টির লাশ ফেলে রাখে।তিনি আরো জানান, ওই দিন বৃষ্টি মাদরাসা থেকে বাড়ি ফিরে না এলে তাকে খোঁজাখুঁজি করা হয়। পরে লোক মারফত নদীয়ার সাথে বৃষ্টিকে দেখা গেছে জানতে পেরে আমাদের সন্দেহ আরো বেড়ে যায়। এরপর আমরা পরিবারের সবাই তাকে খুঁজতে থাকি। আমার বাবা (বৃষ্টির দাদা) রাসেলদের বাড়ির পাশে লোক সমাগম দেখে সেখানে গিয়ে বৃষ্টির লাশ পড়ে থাকতে দেখতে পায়। এ সময় তার চিৎকার ও চেঁচামেচিতে রাসেলের পরিবারের লোকজন বৃষ্টির মৃত দেহ সেখান থেকে তড়িঘড়ি করে মৃগী বাজারের গ্রাম্য ডাক্তার আব্দুল আজিজের চেম্বারের সামনে নিয়ে গিয়ে তারা পালিয়ে যায়।

কালুখালী থানার এসআই আমিনুল ইসলাম জানান, ৭ম শ্রেণির মাদ্রাসা ছাত্রী বৃষ্টি খাতুনকে হত্যার অভিযোগে তার বাবা আতিয়ার রহমান গত ২১ জানুয়ারি রাজবাড়ীর ২নং আমলী আদালতে রাসেলসহ তার পরিবারের ৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। আাদালত মামলাটি কালুখালী থানায় এফআইআর হিসেবে রেকর্ড করার জন্য নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি মামলাটি কালুখালী থানায় রেকর্ড হয়। তবে তার আগেই আসামিরা গ্রাম থেকে পালিয়ে যায়।তিনি আরো জানান, মামলাটির তদন্তভার তার ওপর দেয়া হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment