আক্কেলপুরে জলাতঙ্কের গুজবে উৎকণ্ঠায় গ্রামবাসী!

আক্কেলপুরে জলাতঙ্কের গুজবে উৎকণ্ঠায় গ্রামবাসী!

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার প্রত্যন্ত গন্ডিমসারা গ্রামে জলাতঙ্ক রোগের গুজবে আতঙ্কিত সবাই। এমনকি স্কুলে যাওয়াও বন্ধ করে দিয়েছে শিক্ষার্থীর।
আক্কেলপুরে জলাতঙ্কের গুজবে উৎকণ্ঠায় গ্রামবাসী!রোগ থেকে রেহাই পেতে ঝার-ফুক, পানি পড়া, গুড় পড়াসহ নানা উপায় অবলম্বন করছেন গ্রামবাসী। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বেকায়দায় পড়েছে স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ।

স্থানীয়রা জানায়, ওই গ্রামে কুকুরের কামড় খেয়ে প্রভাষ চন্দ্র দাস নামে এক ব্যক্তি গত ১৯ ফেব্রুয়ারি জলাতঙ্ক রোগে মারা যান। ঘটনার পর স্থানীয় এক গনক ও কবিরাজ গ্রামে গিয়ে হাতের পাতা চালিয়ে জানান যে, গ্রামের শিশু, নারী, পুরুষসহ প্রায় সবার শরীরে মৃত প্রভাষের কুকুরের বিষ প্রবেশ করেছে। গনকের এমন কথায় দিশেহারা হয়ে গ্রামবাসী সেকেলে বিভিন্ন চিকিৎসা নিতে শুরু করে। গুজবের ওই বিষ থেকে সন্তানদের বাঁচাতে বাড়ির বাইরে যেতে দিচ্ছেন না অভিভাবকরা। গন্ডিমসারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অরুনা কান্তি সরকার জানান, গুজবের কারণে গ্রামের বিদ্যালয়গুলোতে আশঙ্কাজনকভাবে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে।
মৃত প্রভাষের স্ত্রী অর্চনা রানী, ছেলে পরিতোষ কুমার ও পরিতোষের স্ত্রী রত্না রানী জানান, একদিকে জলাতঙ্ক রোগের গুজবে মৃত্যু ভয়ে গ্রামবাসীদের নির্ঘুম অবস্থা, অন্যদিকে মৃত প্রভাষের পরিবারের সাথে ওই গ্রামের মানুষরা সামজিক যোগাযোগটুকুও বন্ধ করে দিয়েছে। এমন কুসংস্কারে মৃত প্রভাষের পরিবারটি কার্যত একঘরে হয়ে পড়েছে।

এদিকে, শত চেষ্টা করেও দেখা মেলেনি সেই অভিযুক্ত গনক কবিরাজের। ধর্মগুরু আর কবিরাজের প্রতি চরম ভক্তি-শ্রদ্ধার কারণে এখনো তার পরিচয় জানাননি গ্রামবাসীর কেউ। আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রাধে শ্যাম আগরওয়ালা ও আক্কেলপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, এ অবস্থায় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে গ্রামবাসীদের সচেতন করতে নানা কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। গুজব ছড়ানো ওই কবিরাজের খোঁজেও প্রশাসন মাঠে রয়েছে বলেও জানান তারা।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment