ছাত্রদলে ও ছাত্রলীগে শুধুই গ্রুপিং সুসংগঠিত হতে চায় দুই দল

ছাত্রদলে ও ছাত্রলীগে শুধুই গ্রুপিং সুসংগঠিত হতে চায় দুই দল

মোঃ সুমন আলী খান, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:-
হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলায় অর্ধযুগ ধরে সম্মেলন না হওয়ায় মাঠের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদলের কমিটি নেই। আর ছাত্রলীগের কমিটি থেকেও নেই। ফলে একাধিক গ্রুপে সাংগঠনিক কার্যক্রম ও কর্মসূচি পালন করছে দুই সংগঠনের নেতাকর্মীরা। ছাত্রদলের উপজেলা, পৌর ও কলেজ শাখার কমিটি দীর্ঘদিনেও গঠিত না হওয়ায় এবং ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত থাকায় দুটি সংগঠনের নেতাকর্মীরা ব্যক্তিগতভাবে তাদের অনুসারীদের নিয়ে বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে আলাদা কর্মসূচি পালন করছেন। ছাত্রদলের নেই উপজেলা কমিটি; তবে ১৩ ইউনিয়নে রয়েছে ছাত্রলীগের পুরনো কমিটি।
নতুন কমিটি গঠনের দাবি জোরালো থাকলেও কেন্দ্রীয় বা জেলা নেতারা এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিচ্ছেন না বলে পদপ্রত্যাশী নেতারা অভিযোগ করেছেন। ২০১১ সালে হাবিবুর রহমান হাবিবকে আহ্বায়ক এবং উজ্জ্বল সর্দারকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের ৮ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। পরবর্তী সময় গ্রুপিংয়ের কারণে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়নি। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে গ্রুপিংয়ের জের ধরে নিজেদের মধ্যে অন্তর্কোন্দলে জীবন দিতে হয় ছাত্রলীগ নেতা হ্যাভেন চৌধুরীকে।
এ ঘটনায় কয়েকজনকে বহিষ্কারসহ আহ্বায়ক কমিটির সার্বিক কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। দুই বছর পর ২০১৬ সালে আবু সালেহ জীবনকে সভাপতি ও সাঈদুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। পরে ৯১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়।
কিন্তু এ কমিটির ৬ মাস যেতে না যেতেই গ্রুপিংয়ের কারণে স্থগিত ঘোষণা করে দেন কেন্দ্রীয় কমিটি। সেই থেকে আর কমিটি গঠন করা হয়নি। এ ছাড়া হ্যাভেন হত্যার পর থেকে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটি নেই দীর্ঘদিন থেকে। এসব কারণে ছাত্রলীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীসহ সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি নবীগঞ্জে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে নেতাকর্মীরা পালন করে আসছেন। একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দেন স্থগিত কমিটির সভাপতি আবু সালেহ জীবন ও সাধারণ সম্পাদক সাঈদুর রহমান। অপর গ্রুপের নেতৃত্ব দেন স্থগিত কমিটির সহসভাপতি আলমগীর চৌধুরী সালমান, মহিনূর রহমান ওহি, ফয়ছল তালুকদার ও বাবলু আহমেদ।
এ ব্যাপারে আবু সালেহ জীবন জানান, আওয়ামী লীগের ভ্যানগার্ড হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নবীগঞ্জ উপজেলা কমিটি দীর্ঘদিন ধরে স্থগিত থাকার পরও আমরা সক্রিয়ভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। তবে একাদশ সংসদ নির্বাচনে আমরা যাতে আরও বেশি কাজ করতে পারি, সেজন্য অবিলম্বে নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটির স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়ার জন্য জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সুদৃষ্টি কামনা করছি। সর্বশেষ ২০১২ সালে হারুন রশিদকে আহ্বায়ক ও মোশাহিদ আলম মুরাদকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ছাত্রদলের ৮ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।
এ ছাড়া মোঃ আতাউর চৌধুরীকে আহ্বায়ক ও নজির আহম্মেদ চৌধুরীকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে পৌর ছাত্রদল এবং অলিউর রহমানকে আহ্বায়ক ও জিয়াউল ইসলাম জিয়াকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে কলেজ শাখা ছাত্রদলের কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু গ্রুপিংয়ের কারণে আহ্বায়ক কমিটিগুলো আর পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে রূপ পায়নি। ২০১৭ সালের শেষ দিকে সাবেক বিএনপি দলীয় সাংসদ শেখ সুজাত মিয়া ছাত্রদলের কর্মিসম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। ইতোমধ্যে উপজেলা কমিটির বেশিরভাগ নেতা বিয়ে করে সংসারী হয়েছেন। কেউ কেউ স্থান করে নিয়েছেন মূল দলসহ অন্য অঙ্গসংগঠনে। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও অদ্যাবধি নতুন কমিটি হয়নি। বর্তমান উপজেলা ছাত্রদলের নেতৃত্বে আছেন জহিরুল ইসলাম সোহেল, রায়েছ চৌধুরী, অলিউর রহমান অলি, ফুয়াদ হাসান রাজন প্রমুখ।
পৌর ছাত্রদলের নেতৃত্বে আছেন ছাত্রদল নেতা কপিল আহমেদ, ওয়াহিদুজামান জুয়েল এবং জিয়াউল ইসলাম জিয়া। কলেজ ছাত্রদলের নেতৃত্বে আছেন ছাত্রদল নেতা, জুলন উল্লাহ, মুমিন তালুকদার তৌহিদ চৌধুরী, আবিদুর রহমান আবিদ প্রমুখ। ছাত্রলীগ এবং ছাত্রদলের নেতাদের কাছ থেকে জানতে চাইলে প্রায় নেতারই বলেন সামনে একাদশ জতীয় নির্বাচন এচাড়া এখন প্রায় সময়ই দলিয় কর্মসূচি থাকে আর দলিয় কাজে সু-সংগঠিত হয়ে কাজ করতে কমিটির প্রয়োজন তাই কেন্দ্রিয় ও জেলা নেতাদের কছে একটাই দাবি যুগ্যব্যক্তি ও দলের জন্য সক্রিয় নেতা দেখে অচিরেই কমিটি ঘোষণা করবেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment