মহানগর মর্গ্যান স্কুলের জমি দখলের অভিযোগ নাসিকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ, মেয়রকে স্মারকলিপি

নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী মর্গ্যান স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১০৮ বছরের পুরনো একটি ভবন ভেঙে ওই জায়গাটি দখলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। শনিবার রাতে ভেকু মেশিন দিয়ে দোতলা ভবনটি ভেঙে ফেলা হয়। এ ঘটনায় গতকাল রোববার সকালে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা নগরে বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে নগর ভবনে গিয়ে মেয়রের কাছে স্মারকলিপি দেন।

স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি- ব্রিটিশ আমলে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান থাকাকালে মর্গ্যানের নামে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা হয়। ওই সময় পৌরসভা স্কুলটির জন্য ১৯১ শতাংশ জমি বরাদ্দ দেয়। বিভিন্নভাবে স্কুলের জমি দখল হয়ে যাওয়ায় এখন ১২৩ শতাংশ জমি স্কুলের দখলে রয়েছে। এর মধ্যে পুরনো ওই দ্বিতল ভবনটিও রয়েছে। পুরনো হলেও ভবনটি ব্যবহার উপযোগী ছিল। রমজান মাস উপলক্ষে স্কুল বন্ধ থাকার সুযোগ নিয়ে শনিবার রাতে ভেকু দিয়ে ভবনটি ভেঙে ফেলে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। তবে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বলছে, ভবনটি জরাজীর্ণ ছিল। সেটা ভাঙা হয়নি। আলী আহমেদ চুনকা পাঠাগারের কাজ করতে গিয়ে কিছু অংশ ভেঙে গেছে।

গতকাল সকালে স্কুল ভবন ভেঙে ফেলার খবর ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা স্কুলে ছুটে আসেন। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নগরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে নগর ভবনে যায় স্মারকলিপি দিতে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মর্গ্যান গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ অশোক তরু, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আহসান হাবিব প্রমুখ। 

আহসান হাবিব বলেন, তার (মেয়র আইভী) বাবার নামে নির্মিত আলী আহমেদ চুনকা পাঠাগারটির জন্যই শতবর্ষ পুরনো এ ভবন ভেঙে ফেলা হয়েছে। আমরা মেয়রের সঙ্গে দেখা করে অনুরোধ করেছিলাম যেন এটি ভাঙা না হয়। এতদিন কিছু হলো না, হঠাৎ কী সমস্যা হলো যে, স্কুল ভবনটি ভাঙতে হবে? রাতের আঁধারে এ ধরনের কাজ আসলেই নিন্দনীয়। আমরা শিক্ষক, গভর্নিং বডি, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেব। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক বলেন, আমরা মেয়র আইভীর সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি দিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি সৌজন্যবশতও আমাদের সঙ্গে দেখা করেননি। পরে মেয়র কয়েকজন শিক্ষার্থীকে তার কক্ষে ডেকে নিয়ে স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন। তবে ফিরে এসে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছে, মেয়র তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন।

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, ওই ভবনটির জমি নাসিকের। আরএস, সিএসসহ সব কাগজপত্র রয়েছে আমাদের কাছে। নাসিক তার প্রয়োজনে জায়গাটি চাইতেই পারে। তা ছাড়া জমিটির ব্যাপারে বার বার স্কুল কর্তৃপক্ষকে চিঠিও দেওয়া হয়েছিল।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment