এক লাখ আট হাজার পিস ইয়াবাসহ রাজশাহীর মহানগরীর ডিঙ্গাডোবা এলাকার

রাজশাহীর মাদক স¤্রাট কালাম মোল্লা
ব্যুরো অফিস, রাজশাহী ঃ সরকারের মাদক ও সন্ত্রাস মুক্ত বাংলাদেশ গড়ি
কর্মসুচীর অংশ হিসাবে কক্সবাজারে এক লাখ আট হাজার পিস
ইয়াবাসহ রাজশাহীর মহানগরীর ডিঙ্গাডোবা এলাকার আজিজুল আলমের
ছেলে ব্লাক ক্যাফের স্বত্তাধিকারী আসলাম সরকার ও গাড়ী চালক
চারঘাটের মিয়াপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে মাসুদ রানা ওরফে
রানা ড্রাইভার আটক হওয়ার পর পরই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে এদের নেপথ্যের
নায়ককে। যা অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে এদের নেপথ্যের নায়কের নাম।
তিনি হলেন, রাজশাহী তথা উত্তরাঞ্চলের মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের
গডফাদার হিসেবে পরিচিত চারঘাট ও বাঘা থানা পুলিশের শীর্ষ
গডফাদার কালাম মোল্লা। আসলাম ও ড্রাইভার রানা আটকের পর থেকে
ব্ল্যাক ক্যাফের আরেক এমডি কালাম মোল্লা রয়েছেন আত্মগোপনে।
তবে থেমে নেয় কালাম মোল্লার অপরাধ জগতের কর্মকান্ড। আত্মগোপনে
থেকে আসলামকে রক্ষার চেষ্টাসহ তার অপরাদ জগতের কর্মকান্ড চলছেই।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, চারঘাট ও বাঘার সীমান্তবর্তী মীরগঞ্জ
হেলালপুর গ্রামের আকছেদ আলী মোল্লার ৭ ছেলে। এরা হলেন, রুস্তম
মোল্লা, নজরুল মোল্লা, রুহুল মোল্লা, ইদ্রিশ মোল্লা, মোস্তফা মোল্লা,
কালাম মোল্লা ও সামাদ মোল্লা। এদের মধ্যে কালাম মোল্লা ৬ষ্ঠ এবং
সামাদ মোল্লা ৭ম। অভিযোগ রয়েছে আকছেদ মোল্লার ৭ ছেলের মধ্যে ৫
জনই মাদকের স্বর্গের রাজা। তবে এদের মধ্যে রুস্তম মোল্লার ছেলে
সোহেল মোল্লা, নজরুল মোল্লার ছেলে রুবেল মোল্লা, রুহুল মোল্লার
ছেলে বুলবুল মোল্লা এরাও বাপ চাচাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এখন মাদক
রাজ্যের রাজা। এদের সকলের নামেই চারঘাট,বাঘা, নাটোরসহ ঢাকায়
রয়েছে একাধিক মাদক মামলা ও হত্যা মামলা।

অনুসন্ধানে কালাম মোল্লার বিশ্বস্থ একজন এ প্রতিবেদককে নাম প্রকাশ
না করা শর্তে বলেন, ২০১৫ সালের শেষের দিকে কালাম মোল্লার মাদকের

চালান চট্রগ্রামসহ নিজ এলাকায় একের পর এক আটক হতে থাকলে
কালাম মোল্লা প্রশাসনের নজরে পড়ে যায়। এসময় কালাম মোল্লা
নিজেকে বাচাঁতে নিজেদের এলাকার বাজারে গড়ে তোলা নিজ ভবনের
নিচ তলায় একটি পুরাতন মোটর সাইকেল শো রুম দিয়ে বৈধ
ব্যবসায়ী হিসেবে জাহির করার চেষ্টা করে। তাতেও কাজ না হওয়ায়
অবশেষে রাজশাহী নগরীর আসলাম সরকারের সঙ্গে ২০১৬ সালে চুক্তিতে
রাজশাহী নগরীতে ব্যøাক ক্যাফ চাইনিজ রেষ্টুরেন্ট গড়ে তোলেন মাদক
ব্যবসায়ী গডফাদার কালাম মোল্লা। মুলত প্রশাসনের চোখ ফাকি দিয়ে
যাতে ব্ল্যাক ক্যাফ বসেই থেকে মাদকের জগত নিয়ন্ত্রন করা যায়। এরপর
থেকে সেখানেই বসেই মুলত মাদক নিয়ন্ত্রন করতেন আন্ডার ওয়াল্ডের মাদক
গডফাদার কালাম মোল্লা।

তিনি আরো বলেন, আসলাম সরকারের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকা থেকে
উঠুিত বয়সের সুন্দরী তরুনীদের টাকার লোভ দেখিয়ে তার নিজের হাইচ
মাইক্রোতে করে কক্সবাজার নিয়ে গিয়ে লক্ষ লক্ষ পিস ইয়াবা এনে ব্ল্যাক
ক্যাফেতে বসেই ছড়িয়ে দিতো উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায়। আর এতে
সহযোগীতা করতেন কাল্লাম মোল্লার ভাইরা রবিউল ইসলাম রবিসহ তার
ভাই সামাদ মোল্লা ও তার ভাতিরা। এভাবেই আসলামের পাশাপাশি কালাম
মোল্লা এখন শতকোটি টাকার মালিক। তার নিজ এলাকায় গড়ে
তুলেছেন বিলাশ বহুল দুটি বাড়ী ছাড়াও মহদীপুর এলাকায় নিজের অর্থে
তৈরি করেছেন আধুনিক একটি মসজিদ।

এছাড়াও কালাম মোল্লার রয়েছে মীরগঞ্জে আরো একটি শক্তিশালী
সিন্ডিকেট। যারা কালাম মোল্লার কথার বাইরে একটি ধাপ ফেলেন না।
তারও এখন কালাম মোল্লার পাশাপাশি আত্মগোপনে। তবে কালাম
মোল্লাসহ তার সহযোগীরা আত্মগোপনে থাকলেও তার ভাতিজারা ও
মহদীপুর গ্রামের মাদক স¤্রাট রিয়াল বাহিনীর প্রধান রিয়াল এখনো
চালিয়ে যাচ্ছে মাদকের রমরমা বানিজ্য। অভিযোগ উঠেছে রিয়াল

বাহিনীর প্রধান রিয়ালের সঙ্গে বাঘা থানা পুলিশের কতিপয় সদস্যের
রয়েছে গভীর সখ্যতা।

এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র সিনিয়র সহকারী পুলিশ
সুপার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কালাম মোল্লার বিরুদ্ধে চারঘাট, বাঘাসহ
দেশের বিভিন্ন থানায় রয়েছে একাধিক মাদকসহ হত্যার মামলা।
তাকেসহ তার সহযোগীদের গ্রেফতার করতে পুলিশ ২৪ ঘন্টা নজর রাখছে।
কিন্তু কালাম মোল্লাসহ তার সহযোগীরা এখন আত্মগোপনে। তার পরেও
তাদের সন্ধান জানতে সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে দাবি করেন
পুলিশের এই দায়িত্বশীল কর্মকর্তা।##

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment