স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতের পর ‘গল্প’ সাজিয়েও হলো না রক্ষা

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলায় স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতের পর বাঁচার জন্য দারুণ এক ‘গল্প’ সাজিয়েছিলেন ইব্রাহিম শেখ। প্রথমদিকে এলাকাবাসী সে ‘গল্প’ বিশ্বাসও করেছিল। তবে শেষ পর্যন্ত পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আটকে গেলেন ইব্রাহিম। স্বীকার করলেন স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতের কথা।

ঘটনাটি বুধবার মধ্যরাতের। ওই রাতে বিশ্বকাপ ফুটবলের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ইংল্যান্ড ও ক্রোয়েশিয়ার মধ্যকার ম্যাচ দেখতে বাধা দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রী লিপি বেগমের (২৫) পেটে ছুরি চালিয়ে দেন উপজেলার মহেশপুর ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা ইব্রাহিম। পরদিন সকালে চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পথে মারা যায় লিপি।

কাশিয়ানী থানার ওসি মো. আজিজুর রহমান জানান, স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতের পর ইব্রাহিম প্রতিবেশীদের কাছে গল্প সাজায় যে, দুর্বৃত্তরা সিঁধ কেটে তার ঘরে ঢুকে প্রথমে তাকে মারধর করে। তখন তার স্ত্রী লিপি চিৎকার দিলে দুর্বৃত্তরা লিপিকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। প্রতিবেশীরা ইব্রাহিমের কথা বিশ্বাস করে লিপিকে দ্রুত কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে লিপিকে নেওয়া হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তবে অবস্থার অবনতি হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পথে ফেরিতে লিপির মৃত্যু হয়।

তিনি জানান, স্ত্রীর ছুরিকাঘাত নিয়ে ইব্রাহিমের বক্তব্যে সন্দেহ হলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকেই ইব্রাহিমকে বৃহস্পতিবার আটক করে থানায় আনা হয়। পরে তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি স্ত্রী লিপি বেগমের পেটে ছুরি চালানোর কথা স্বীকার করেন। জিজ্ঞাসাবাদে ইব্রাহিম জানায়, রাগের মাথায় স্ত্রীর পেটে ছুরি চালিয়ে তিনি হতভম্ভ হয়ে পড়েন। নিজে বাঁচার জন্য ফন্দি আঁটতে থাকেন। পরে তিনি ঘরের সিঁধ কেটে দুর্বৃত্তের হামলার গল্প সাজান বলে পুলিশকে জানান।

ওসি আরও জানান, ইব্রাহিম শেখ জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে বলেছে, রাগের মাথায় স্ত্রীর পেটে ছুরি চালিয়ে তিনি ভুল করেছেন। পরে বাঁচার জন্য গল্প সাজিয়েও ফেঁসে গেছেন।

ইব্রাহিমকে গোপালগঞ্জের ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হবে বলেও জানিয়েছেন ওসি আজিজুর।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment