মৈনট ঘাটে পদ্মার বুকে মাছের ফাঁদ, ‘বাঁধ’ ভেঙে দিল প্রশাসন

নিজস্ব প্রতিবেদক: । দোহার উপজেলায় মৈনট ঘাটের অদূরে  পদ্মা   নদীর   মূল   প্রবাহে আড়াআড়ি বাঁশের  ‘ব্লক বাঁধ’ দিয়ে অবাধে মাছ শিকার  করছিল স্থানীয় প্রভাবশালী মুরাদ মৃধা ও কাশেম মেম্বার নামে দুই ব্যক্তি।
 
মৈনট ঘাটের অদূরে  পদ্মা   নদীর মূল এলাকায় বিশাল আকারের দুটি বাঁশের তৈরি বাঁধ আড়াআড়িভাবে দিয়ে পুরো নদী আটকে রেখে মাছ শিকার করা হচ্ছে। বাঁশের সঙ্গে গুটি, বেড় ও ছোট ছোট ফাঁসের জাল পাতার কারণে এতে ছোট-বড় মাছসহ রেণুও আটকে যাচ্ছে। বাঁধের কারণে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে এবং নৌচলাচল ব্যাহত হচ্ছে। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী নদীতে এভাবে বাঁধ দেওয়ার কোন ধরণের নিয়ম না থাকলেও তা তোয়াক্কা করেনি ওই দুই প্রভাবশালী ব্যক্তি।

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, দোহার উপজেলার মৈনট দিয়ে প্রবাহিত পদ্মা নদীতে বাঁশ দিয়ে আড়াআড়ি ব্লক বাঁধ দেওয়া হয়েছে। নদীর ওপারে রয়েছে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার গোপালপুর ট্রলারঘাট। বাঁশ ও জালের দীর্ঘ এই বাঁধ নদীর  মূল প্রবাহে আড়াআড়িভাবে তৈরি করা হয়েছিল। বাঁশের সঙ্গে আটকানো জালের নিচে ভারী পাথর বাঁধা। নিচের অংশে রয়েছে ‘রাক্ষুসে জাল’। এমন জাল ইলিশ ধরার ফাঁদ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আড়াআড়ি এমন বাঁধে নৌযান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে।সেখানে কর্মরত মৎস্যজীবীরা জানান, প্রতি দুই ঘণ্টা পর পর জালগুলোতে মাছ ধরা পড়েছে কি না, তা দেখা হয়। ইলিশ, ছোট ছোট জাটকা সহ সবই ধরা পড়ছে এ জালে। এ মাছ ধরার কাজ করেণ বেশ কয়েকজন জেলে। নৌকা ব্যবহার করে তাঁরা জালে আটকানো মাছগুলো সংগ্রহ করেন।নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেখানে দায়িত্বে থাকা জেলেরা বলেন, ‘মুরাদ মৃধা ও কাশেম মেম্বার আমাদেরকে মাছ ধরার কাজে খাটাচ্ছেন। কোনো কোনো দিন ১০/১২ মণ মাছ ধরা পড়ে। আবার কোনো দিন চার-পাঁচ মণ মাছ পাওয়া যায়। বেশির ভাগ মাছ দোহারের মৈনট ঘাটে বিক্রি করা হয়। গত ২/৩ সপ্তাহ ধরে মাছ ধরার কাজ চলছিল।’নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মৈনট ঘাটের এক মাছ ব্যবসায়ী জানান, এভাবে নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ শিকারের কারণে সাধারণ জেলেরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছিল। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মুরাদ মৃধা বলেন, “আমি এই বাঁধের সাথে জড়িত নই। কাশেম মেম্বারের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন, ওনি সব জানেন।”বিষয়টি জানতে কাশেম মেম্বার কে ফোন দেয়া হলে তিনিও বাঁধের সাথে তাঁর সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেণ।দোহার উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান খান বলেন, বাঁধের বিষয়ে আমরা অবগত ছিলাম না। প্রিয় বাংলা অনলাইনে সংবাদটি দেখে অভিযান চালিয়ে বাঁধ ভেঙে দিয়েছি। কারণ মাছ শিকারে নদীতে এভাবে বাঁধ দেয়া দেশের প্রচলিত মৎস্য আইনের পরিপন্থী। তিনি জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা আক্তার রিবা সহ কোষ্টগার্ডের সহযোগিতায় অভিযান পরিচালনা করা হয়।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment