আমদানিতে না ঝুঁকে নিজেদের গ্যাস অনুসন্ধান ও আহরণকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিতে হবে, বললেন বদরুল ইমাম

আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমায় গ্যাসের দামও কমেছে। ফলে ‘ঝাঁপিয়ে পড়ার মতো’ অবস্থানে নেই তেল-গ্যাস অনুসন্ধানকারী কোম্পানিগুলো। যার কারণে বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের গ্যাসক্ষেত্র অনুসন্ধানে স্থবিরতার সৃষ্টি হয়েছে। যদিও দেশটি জ্বালানি সংকট এড়াতে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস বা এলএনজি আমদানির পথে পা বাড়িয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ও জ্বালনি বিশেষজ্ঞ ড. বদরুল ইমাম সম্প্রতি সাউথ এশিয়ান মনিটরকে বলেন, ‘বাংলাদেশ গ্যাসের ওপর ভাসছে একটা সময়ে এ ধরনের প্রচারণা থেকে সরকার গ্যাস রপ্তানির পক্ষে উদ্যোগী হয়ে উঠেছিলো। এখন আবার বাংলাদেশের গ্যাস সম্পদ নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে এ রকম ধারণা সরকারের চিন্তা ও কর্মকে প্রভাবিত করেছে। অথচ দুটি ধারণাই ভুল। আর সেই ‘ভুল’ না জানার কারণ ছিলো তাও নয়। প্রথমটার পেছনে উদ্দেশ্য ছিলো ‘গ্যাস রপ্তানি’। আর শেষেরটার উদ্দেশ্য ‘গ্যাস আমদানি’। বিশাল সমুদ্র এলাকায় অনুসন্ধান এখনও নূন্যতম পর্যায়ে রয়ে গেছে। আর ওই ধারণা থেকে জ্বালনি আমদানির ওপর সর্বতোভাবে ঝুঁকে পড়াটা ঠিক নয়। নিজেদের গ্যাস অনুসন্ধান ও আহরণকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিতে হবে।

এদিকে মাল্টি ক্লায়েন্ট সিসমিক সার্ভের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে ড. বদরূল ইমাম বলেন, এটি বিশ্বের প্রায় সব দেশেই একটি প্রতিষ্ঠিত পন্থা, যার মাধ্যমে একটি দেশ তার সমুদ্রের নিচে ভূতাত্তি¡কগঠন ও সম্ভাবনার প্রাথমিক ধারণা পেতে পারে এবং এই সিসমিক জরিপ থেকে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে আন্তর্জাতিক তেল-গ্যাস কোম্পানিকে অনুসন্ধানকাজে আকৃষ্ট করতে পারে। এমনকি তাদের সঙ্গে চুক্তি করার সময় নিজস্ব স্বার্থ অনুযায়ী দর-কষাকষিও করতে পারে।

তিনি জানান, প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী মাল্টি ক্লায়েন্ট সিসমিক সার্ভের কাজটি নিয়োজিত কোম্পানি বিনা মূল্যে করে দেয়। কিন্তু জরিপে প্রাপ্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে যে ‘ডেটা প্যাকেজ’ তৈরি করে তা অনুসন্ধানে আসতে আগ্রহী আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানির কাছে তারা বিক্রি করে। এভাবে সার্ভিস কোম্পানি তার জরিপ খরচ ওঠানোর পর লভ্যাংশ দেশটির সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেয়।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment