নুসরাত হত্যা | পরিকল্পনার পর হত্যায়ও অংশ নেয় পপি

নুসরাত হত্যা | পরিকল্পনার পর হত্যায়ও অংশ নেয় পপি

মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাতকে যৌন নিপীড়নের পর পুড়িয়ে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার ভাগনি (শ্যালিকার মেয়ে) উম্মে সুলতানা পপি ওরফে শম্পা।

শুক্রবার রাতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফ উদ্দিন আহমেদের আদালত তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

এদিকে একই আদালত জাবেদ হোসেনকে আরও তিন দিনের রিমান্ড দিয়েছেন। এর আগে ১৩ এপ্রিল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইনের আদালতে তুলে ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত তাকে ৭ দিনের রিমান্ডের নির্দেশ দেন। এই মামলার এজাহারভুক্ত ৬ নম্বর আসামি জাবেন হোসেন সোনাগাজী পৌরসভার উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের রহমত উল্লাহর ছেলে।

পিবিআইয়ের চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল বলেন, নুসরাত হত্যাকাণ্ডে যে দুজন নারী সদস্য জড়িত ছিল তাদের মধ্যে উম্মে সুলতানা পপি ওরফে শম্পা একজন। সে জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে জানান, সে এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনায় জড়িত থাকার পাশাপাশি, ঘটনার দিন নুসরাতকে নীচতলা থেকে ডেকে ঘটনাস্থলে নিয়ে আসে এবং সরাসরি হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণ করে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পিবিআইয়ের অন্য একটি সূত্র জানায়, জবানবন্দিতে উম্মে সুলতানা পপি ওরফে শম্পা স্বীকার করে বলেন- নুসরাত হত্যাকাণ্ডের তিনটি সভার মধ্যে প্রথমটিতে সে ও মণি উপস্থিত ছিলো। হত্যাকাণ্ডের সময় পপি ও মণি নুসরাতের হাত বাঁধে এবং জাবেদ ও যোবায়ের কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়। পরে তারা পরীক্ষার হলে অবস্থান করে। নুর উদ্দিন ও হাফেজ আবদুল কাদের তাদের নানা ভাবে নুসরাত হত্যাকাণ্ডে অংশ নিতে উৎসাহ দিয়েছে।

এর আগে গত ৯ এপ্রিল শম্পা সন্দেহে সোনাগাজী উপজেলার মঙ্গলকান্দি ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের মেয়ে উম্মে সুলতানা পপিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সে একই মাদ্রাসা থেকে এবার আলিম পরীক্ষার্থী।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআইয়ের পরিদর্শক মো. শাহ আলম বলেন, আলোচিত নুসরাত হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত পাঁচজনের জবানবন্দি আদালত রেকর্ড করেছে। এদের সবাই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।

এর আগে ১৪ এপ্রিল রবিবার রাতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে নুসরাত হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে মামলার অন্যতম আসামি নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামিম। ১৭ এপ্রিল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফ উদ্দিন আহমেদের আদালতে আবদুর রহিম ও শরীফ, ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় একই আদালতে হাফেজ আবদুল কাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

আলোচিত এ মামলা এ পর্যন্ত ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও পিবিআই। এদের মধ্যে অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা, কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, যোবায়ের হোসেন, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, জান্নাতুল আফরোজ মনি, আবদুর রহিম ওরফে শরিফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ওই মাদ্রাসার সহসভাপতি রুহুল আমিন।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment