নবীনগরে এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে হেনস্থা করার অভিযোগ

মোঃ দেলোয়ার হোসেন
ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগর

নবীনগরে  হেদায়েত উল্লাহ নামের এক সাংবাদিক নবীনগরের উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলামকে কোন বিষয়ে হাঁটা অবস্থায় প্রশ্ন করছেন। কিন্তু নির্বাচন কর্মকর্তা মহোদয় সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে হেঁটে চলে যাচ্ছিলেন। কিন্তু দেখা গেল ওই সাংবাদিক সাহেব এক পর্যায়ে তার প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার জন্য নির্বাচন কর্মকর্তার গায়ে হাত দিয়ে জোরপূর্বকভাবে প্রশ্নের উত্তর আদায় করার চেষ্টা করছেন। সাংবাদিক সাহেবের ভাবখানা এমন যেন, ‘যেহেতু  আমি সাংবাদিক, তোমাকে আমার প্রশ্নের উত্তর দিয়েই স্থান ত্যাগ করতে হবে জনাব।’
অতপর: গায়ে হাত, ধস্তাধস্তি, হাতাহাতি………
গতকাল বিকেলে উপজেলার টিয়ারা আয়েশা বেগম উচ্চ বিদ্যালয়ে এ অনাকাংখিত ঘটনাটি ঘটে। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানা গেছে।
জাহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের  বলেন,
গতকাল দিনভর উপজেলার টিয়ারা আয়েশা বেগম উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জাতীয় পরিচয় পত্রের স্মার্ট কার্ড বিতরণের কাজ চলছিল।
এ অবস্থায় বিকেল আনুমানিক  চারটার দিকে
স্মার্টকার্ড বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ তুলে মো. হেদায়েত উল্লাহ নামের এক সাংবাদিক মাঠে আমাকে প্রশ্ন করতে থাকেন। এ সময় আমি ওই সাংবাদিকের মিথ্যে অভিযোগের প্রশ্নের কোন উত্তর না দিয়ে হেঁটে চলে আসছিলাম। এমন সময় হেদায়েত জোরপূর্বক ভাবে আমাকে প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যেতেই হবে বলে আমার গায়ে হাত দেয় এবং আমার সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু করে। একজন সাংবাদিকের এমন অপ্রত্যাশিত কর্মকান্ডে আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ি।
পরে আমার গায়ে হাত তোলা ও ধস্তাধস্তির একটি ভিডিও ফুটেজ সাংবাদিক হেদায়েত তার ফেসবুকে আপলোড করে। যা ক্ষণিকের মধ্যে ভাইরাল হয়।

এ বিষয়ে সাংবাদিক হেদায়েত উল্লাহ রাতে সাংবাদিকদের  বলেন,’আমি প্রশ্ন করতে গিয়ে স্যারের গায়ে হাত দেয়াটা আমার বড় অন্যায় হয়েছে। কিন্তু তিনিও আমার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে আমার মোবাইল ফোনটি এক পর্যায়ে  ফেলে দিয়েছেন। তবে আমার অন্যায়ের জন্য আমি স্যারের (নির্বাচন কর্মকর্তা) কাছে মাফ চাইবো। এ নিয়ে যেন মামলা না হয়, আপনারা (সাংবাদিক) সেদিকে একটু খেয়াল রাখবেন প্লিজ।’

তবে স্থানীয় একাধিক সাংবাদিক জানান, সাংবাদিক পরিচয় দেয়া এই হেদায়েত উল্লাহ বিভিন্ন অনলাইনটিভিতে ‘নবীনগর প্রতিনিধি’ হিসেবে কাজ করেন। উপজেলার  শিবপুরের সাহারপাড়া গ্রামের এই সাংবাদিক নবীনগর উপজেলা প্রেসক্লাবেরও সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে অধিষ্ঠিত আছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক খান জাহান অালী চৌধুরী রাতে বলেন, বিষয়টি খুবই দু:খজনক। আমরা সহসাই ক্লাবে সভা ডেকে ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবো।’

এদিকে স্থানীয় একাধিক সিনিয়র সাংবাদিক এ ঘটনাটিকে অতীব  লজ্জাজনক আখ্যায়িত করে নবীনগরের সাংবাদিকতার ইতিহাসে এটি একটি  ‘বাজে নজির’ হয়ে থাকবে বলে মত দিয়েছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানান, ‘বিষয়টি ইউএনও স্যারসহ পুলিশকেও জানিয়েছি। মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে। নির্বাচন কমিশনের উচ্চ মহলকেও বিষয়টি অবগত করেছি।’
নবীনগর থানার সেকেন্ড অফিসার মো. জসিম উদ্দিন রাতে  বলেন,”নির্বাচন কর্মকর্তা মহোদয় থানায় এসেছিলেন। তবে লিখিত অভিযোগটি এখনও পাইনি। পেলে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

আপনি আরও পড়তে পারেন