উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেই ডেঙ্গু শনাক্তের কিট, বিপর্যয়ের আশঙ্কা

ডেঙ্গু আতঙ্ক কাটেনি, বরং বেড়েছে। অসংখ্য মানুষ ঈদের ছুটি কাটাচ্ছেন গ্রামে। সরকারি কর্মকর্তারা দেশবাসীকে ঈদের ছুটিতে যাওয়ার আগে ও ছুটি থেকে ফেরার পর বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু বেশিরভাগ উপজেলার সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু শনাক্তকরণ উপকরণ (কিট) পৌছায়নি, ফলে ডেঙ্গু আক্রান্ত হলেও শনাক্তকরণ সম্ভব না হওয়ায় ওসব অঞ্চলে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।

একসপ্তাহ আগেই দেশের সব জেলায় ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। জেলাগুলোয় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ঢাকা থেকে সারা দেশে মানুষ যাওয়ার কারণে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের ধারণা। তবে ঈদের আগে শেষ কর্মদিবস পর্যন্ত দেশের সব সরকারি উপজেলা হাসপাতাল ডেঙ্গু শনাক্তকরণ কিট সংগ্রহ করতে পারেনি।রাজশাহী, কুমিল্লা, যশোর, খুলনা, ফরিদপুর, টাঙ্গাইল, কক্সবাজার, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ, দিনাজপুর, সিলেট, পাবনা ও রংপুর জেলার উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে খবর নিয়ে জানা গেছে, ওইসব হাসপাতালে ডেঙ্গু শনাক্তকরণ কিট (উপকরণ) নেই।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ডেঙ্গু রোগীদের শনাক্ত করতে জরুরী ভিত্তিতে প্রতিটি জেলা সদর হাসপাতালকে ১০ লাখ ও উপজেলা হাসপাতালকে ২ লাখ টাকা করে বিশেষ বরাদ্দ দিয়েছে। এই টাকায় ডেঙ্গু শনাক্তকরণ কিট ও অন্যান্য চিকিৎসা উপকরণ কেনা নির্দেশনা পাওয়ার পরও অনেক উপজেলায় তা কেনা হয়নি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, ডেঙ্গু শনাক্তকরণ কিটসহ অন্যান্য চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনার জন্য তাঁরা ২ লাখ করে টাকা বরাদ্দ পেয়েছেন। কিট আনার প্রক্রিয়া চলছে।কারণ সরকারী ক্রয়ের নীতি অনসুরণ করতে গিয়ে টেন্ডার কমিটি গঠন, দরপত্র আহ্বান, দরপত্র বাছাই-যাছাই, ওয়ার্ক অর্ডার ইত্যাদি নানা ধাপে পর্যাপ্ত সময় ও সমন্বয়ের প্রয়োজন হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, আমরা প্রত্যেক সিভিল সার্জনকে সুস্পষ্ট করে বলেছি সংশ্লিষ্ট উপজেলায় যেন কিট থাকে। প্রয়োজনের সময় মানুষ যেন পরীক্ষা করাতে পারেন। আজ (শনিবার) এসএমএসের মাধ্যমে এই নির্দেশনা আমি সারা দেশে পাঠাব।

এদিকেডেঙ্গু শনাক্তের কিট সরবরাহ নিশ্চিত করতে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর বিনাশুল্কে আমদানির ব্যাপারে বিশেষ সুযোগ দিয়েছে। অধিদপ্তর সারা দেশে কিট সরবরাহের তথ্যও সমন্বয় করছে। একটি হটলাইনও তারা খুলেছে। ০১৭০৮৫০৬০৪৭ নম্বরে ফোন করে কিটের ব্যাপারে সব ধরনের পরামর্শ পাওয়া যাবে।

ঈদের সময় প্রায় ১ কোটি মানুষ ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর ছেড়ে যাবে। তবে ইতিমধ্যে যাদের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে, তাদের ঈদের ছুটিতে ঢাকা ছেড়ে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সরকারিভাবে বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার আগে ও ছুটি থেকে ফেরার পর ঢাকাবাসীকে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিওয়া হচ্ছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন