জনগণের স্বাস্থ্যসেবার কথা বিবেচনা করে সরকার স্বাস্থ্যখাতের জন্য কোনো উন্নয়ন করেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বর্তমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে দেশের হাসাতালগুলোর দিকে তাকালে বোঝা যায় দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে মানুষ। লাশ পড়ে থাকছে পথে ঘাটে।
দেশের এমন পরিস্থিতিতে দলীয় লোকজনের মাধ্যমে সরকারি ত্রাণ বিতরণ না করে, দায়িত্বটা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি এ আহ্বান জানান। রিজভী বলেন, ‘এরই মধ্যে দেশজুড়ে ভযাবহ খাদ্য সংকট শুরু হয়েছে। মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্তসহ দরিদ্র মানুষরা সর্বগ্রাসী ক্ষুধার মধ্যে নিপতিত হয়েছে।’
ঢাকঢোল পিটিয়ে ত্রাণের কথা বললেও রিলিফের শত শত বস্তা খাদ্যসামগ্রী পাওয়া যাচ্ছে সরকারি দলের নেতাদের বাসায় উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘যেকোনো ধরণের জাতীয় দুর্যোগ হলেই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হয়ে যায় পোয়াবারো। সুতরাং দুঃস্থ মানুষের মাঝে সরকারি ত্রাণ বিতরণের দায়িত্ব অবিলম্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ছেড়ে দেওয়া হোক। তাতে ত্রাণের সুষমবণ্টন নিশ্চিত হবে।’
রিজভী বলেন, ‘করোনভাইরাস বাংলাদেশে এখন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ঢাকাসহ সারাদেশের ২০ জেলায় করোনভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের ১০টি জেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন কমপক্ষে ১৫ জন। এমন হিসাব প্রায় প্রতিদিনের।’
জনস্বাস্থ্য নিয়ে এ সরকার কিছুই করেনি অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘মন্ত্রীদের মুখের উন্নয়নের জোয়ারের খবরে এতদিন দেশ ভেসে গেছে! তাহলে স্বাস্থ্যে খাতের এত বেহাল দশা কেন? হাসপাতালে নেই কোনো আধুনিক সরঞ্জাম। নেই পরীক্ষা সামগ্রী, রোগ ডায়ানোসিসের কোনো ব্যবস্থা নেই, তেমন কোনো আইসিউ নেই, হাসপাতালে চিকিৎসক নেই, নার্স নেই। বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে মানুষ। লাশ পড়ে থাকছে পথে ঘাটে।’
‘এমন পরিস্থিতিতে মানুষের বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। যখন করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাব শুরু হয়েছে, সরকার তখন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। সে কারণেই মেডিকেল সেক্টরে করোনাভাইরাস প্রতিরোধর কোনো ব্যবস্থা প্রস্তুতি ছিল না’— বলেন রুহুল কবির রিজভী।
তিনি আরও বলেন, ‘আজ দিবাগত রাতে উদযাপিত হবে সৌভাগ্যের রজনী পবিত্র শবে বরাত। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে মুসলিমদের জন্য এ রাতটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ রাতে আল্লাহ তার বান্দাদের বিশেষ রহমত ও ক্ষমা দান করেন। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের মুসলমানরা নফল ইবাদতের মাধ্যমে আজ শবেবরাত পালন করবেন। তবে বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের কারণে শবেবরাতের রাতে মসজিদ, কবরস্থান ও মাজারে যেখানে বেশি জনসমাগম হয় সেখানে যাওয়া থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করছি। আমরা মুসলিম ভাইদের অনুরোধ করব তারা যেন মসজিদের জামাতে নামাজ না পড়ে বাড়িতে নামাজ আদায় করেন।’