নবাবগঞ্জে সালিশ বৈঠকে প্রতিপক্ষের হামলা; আহত অন্তত ১৫

দোহার-নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি.
ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় ঘুরি উড়ানো নিয়ে দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের সালিশ বৈঠকে প্রতিপক্ষের স্বশস্ত্র হামলায় অন্তত ১৫জনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। পরে একটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে নারী ও শিশুদের মারধর, আসবাবপত্র ভাংচুর, লুটপাটেরও অভিযোগ পাওয়া যায়। ঘটনাটি রোববার দুপুরে উপজেলার নয়নশ্রী ইউনিয়নের। এ ঘটনায় নবাবগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত ২৯ মে বেলা ১১টার দিকে উপজেলার নয়নশ্রী ইউনিয়নের রাহুতহাটি চকে শখ করে ঘুরি উড়াচ্ছিলেন গ্রামের বয়োজেষ্ঠ্য আলতাফ মিয়া। একই সময়ে বান্দুরা সান্দার পাড়ার আরিফসহ কয়েকজন উৎশৃঙ্খল যুবক এসে পাশের ভিটায় ঘুরি উড়াচ্ছিল। যুবকরা আলতাফ মিয়ার ঘুরির সুতোয় প্যাচ লাগিয়ে কেটে দেয়। এনিয়ে গ্রামের লোকজনের সাথে যুবকদের কথা কাটাকাটি হয়। বিকালের দিকে উৎশৃঙ্খল যুবকরা সংগঠিত হয়ে এলাকাবাসীর উপর হামলার চেষ্টা করে। এসময় ঐ গ্রামের বাসিন্দা, যুবলীগ নেতা মো. ফারুক হোসেন দুপক্ষকে শাসন করে থামিয়ে দেন। এরপর থেকে উৎশৃঙ্খল যুবকরা নতুন বান্দুরা এলাকায় অবস্থান নিয়ে রাহুতহাটি গ্রামের লোকজন পেলে মারার জন্য খুঁজতে থাকে।

মিমাংসা করতে ৩১মে রোববার বেলা ১১টায় নয়নশ্রী ইউনিয়ন পরিষদে দুপক্ষের লোকজন সালিশ বৈঠকের আয়োজন করেন। সালিশ বৈঠক চলাকালীন বান্দুরা এলাকার অন্তত দুই-আড়াইশ’ লোক বৈঠক স্থলে জড়ো হয়। প্রায় জনের হাতে দেশিয় কিংবা ধারালো অস্ত্র দেখেছেন এলাকাবাসী। সালিশের প্রায় শেষ পর্যায়ে প্রতিপক্ষের লোকজন হাতুড়ি, লাঠি ও রাম দা নিয়ে হামলা করে। এতে প্রতিপক্ষের ফারুক হোসেনসহ রাব্বি (২৪), মো. জুয়েল (৪২), সোহেল ৩৪), আলমগীর (৩৫), সাদ (২০), জিসান (১৮) সহ আরও অনেকে আহত হয়। গুরুত্বর আহত রাব্বিকে ঢাকায় নেয়া হয়েছে।

আরও অভিযোগ পাওয়া যায়, পরে ৪০/৫০ জন লোক রাহুতহাটি গ্রামের রাব্বিদের বাড়িতে হামলা করে। তারা ঘরে ঢুকে রাব্বির মা সহ দুই বোনকে পিটিয়ে আহত করে। পরে ঘরে থাকা টিভি, টেবিল, আলমীরাসহ আসবাবপত্র ভাংচুর করে চলে যায়। রাব্বির বোন তাহমিনা অভিযোগ করেন, হামলার সময়ে ঘরে থাকা ১১ ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা লুট হয়েছে।

এলাকাবাসীর পক্ষে মো. ফারুক হোসেন, মো. জুয়েল, সোহেল, আলমগীরসহ ১০/১৫জন সোমবার বেলা ১২টায় রাহুতহাটি এলাকায় গেলে অভিযোগ করেন, বান্দুরার কামাল হোসেন, স্বপন বেপারী, মীর খোকন, মীর মাসুদের লোকজন সালিশ বৈঠকের নামে পরিকল্পিত আমাদের উপর হামলা করেছে। এবিষয়ে নবাবগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।

এবিষয়ে কামাল হোসেন বলেন, ঘটনাটি মিমাংসা করতে ঐ এলাকার আওয়ামীলীগ নেতা মিজানুর রহমান আমাকে যেতে বলেছিলেন। ফারুক হোসেনরাই পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে। যা নিয়ে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।

এবিষয়ে মীর খোকনের মুঠোফোনে সংযোগ দিয়ে পাওয়া যায়নি। মীর মাসুদ বলেন, রাহুতহাটি গ্রামের লোকজনরা দা, লাঠি নিয়ে না এলে কোন ঝামেলা হতো না। এলাকার শান্তির জন্য সালিশে গিয়ে ছিলাম। তারা আমাদের নামেই থানায় অভিযোগ করেছে।

নবাবগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক মো. মহিদুল ইসলাম বলেন, ঐ এলাকায় গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে অভিযোগ তদন্ত করা হয়েছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন