পেকুয়ার কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষকরা

পেকুয়ার কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষকরা
চরম আর্থিক সংকটে।কেউ চা-সপে,কেউ মুদির দোকানে কর্মী। খুঁজ রাখেনি কেউ!
মো:জহিরুল ইসলাম,পেকুয়া(কক্সবাজার)প্রতিনিধি:
কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষক মো:মাহমুদুল করিম। দরিদ্র পরিবারের সন্তান। মাস্টার্স শেষ বর্ষের পরীক্ষা দিয়ে শিক্ষকতা পেশায় আসেন। স্কুল থেকে বেতন দেয় মাত্র ৩ হাজার টাকা  তাও অনিয়মিত।
তবে কয়েকটি টিউশনি করে এবং বাসায় কোচিং করে কোন মতে সংসার চলতো এই শিক্ষকের। এমপিও না হওয়াতে সরকারি কোন বেতন বা সুযোগ সুবিধা পায়না। এর মধ্যে দেশে চলমান করোনা সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ৯ মাস সেই স্কুলের বেতন নেই, সাথে নেই কোচিং বা টিউশনি এতে চরম আর্থিক সংকটে থাকা সেই শিক্ষক প্রথমে কিছুদিন দোকানে এবং পরিচিতদের কাছ থেকে ধারদেনা করে সংসার চালালেও বর্তমানে আর্থিক সংকট কাটাতে পেকুয়ার সাবেকগুলদী ষ্টেশনে একটি চা-সপে কাজ নিয়েছেন। তিনি জানান,আমার পরিবারে ৫জন সদস্য।আমি শিক্ষক সেই পরিচয় গোপন করে এখানে কাজ নিয়েছি,কি করবো?খেতেতো হবে।
এভাবে অসংখ্য নন এমপিও কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক চরম মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে বলে জানা গেছে।পেকুয়া উপজেলা বেসরকারি( নন এমপিও) শিক্ষক কল্যাণ পরিষদের আহবায়ক মো:জহিরুল ইসলাম ও সদস্য সচিব হাসান তৌহিদ রাজন জানান,আমার জানা মতে পেকুয়া উপজেলাতে প্রায় ৪০০শ জন কিন্ডারগার্টেন (ননএমপিও) শিক্ষক আছে।করোনাভাইরাসের ভয়াল গ্রাসের আতঙ্কে সরকারি বিধি অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দীর্ঘ ৯মাস বন্ধ থাকার কারণে অভিভাবককের কাছ থেকে মাসিক বেতন আদায় করতে না পারায় সে সব (ননএমপিও)কিন্ডারগার্টেন শিক্ষকদের বেতন ভাতা পরিশোধ করেনি স্কুল কর্তৃপক্ষ।ফলে করিমের মতো শত শত কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষক বেকারত্বের অভিশাপ নিয়ে চরম আর্থিক সংকটে জীবনযাপন করছেন।
মগনামা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক-আক্তার হোছাইন আগামীর সময়-পেকুয়া প্রতিনিধি মাও:জহিরুল ইসলামকে বলেন,ননএমপিও শিক্ষকরা সত্যিকার অর্থে চরম আর্থিক সংকটে দিন কাটাচ্ছে তারা কাউকে বলতেও পারছে না,সইতেও পারছেনা।করোনা সংকটে প্রাইভেট বা কোচিং সব বন্ধ। সেখান থেকে তারা সামান্য যা আয় করতো তাও  বন্ধ। ফলে একেবারে শুন্যহাত।
বেসরকারি শিক্ষক কল্যাণ পরিষদের সহ-সভাপতি কাউছারুল ইসলাম দাবী করেন,করোনা সংকটে অনেকে অনেক কিছু পেলেও কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষকরা কিছুই পায়নি। প্রশাসনকে অনেক অনুরোধ করলেও কেউ ঠিক মত এগিয়ে আসেনি।
পেকুয়া উপেজলার আরেক শিক্ষক বলেন,করোনা সংকটের মধ্যে সংসার খরচ চালাতে ইতি মধ্যে ২ টি গরু বিক্রি করেছি।কান্নায় বুক ভেঙ্গে যায় তবে দেখাতে পারিনা।
এ ব্যপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার উলফৎ জাহান বলেন,এটা সত্যি,ননএমপিও শিক্ষকরা চরম আর্থিক সংকটে আছে। কারন তারা স্কুল থেকেই সামান্য টাকা পায়।স্কুল বন্ধ থাকাতে তারা চরম আর্থিক সংকটে পড়েছেন।
উল্লেখ্য যে,পেকুয়া উপজেলায় (EIIN)নম্বর ছাড়া কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে প্রায় ৪০টি।
করোনার ২য় ধাপ মোকাবেলায় সরকার বাহাদুর ও জনপ্রতিনিধিদের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন পেকুয়া উপজেলার কিন্ডারগার্টেন স্কুলের অসহায় শিক্ষকবৃন্দ।

আপনি আরও পড়তে পারেন