বাংলাদেশ বিশ্বের সর্বাধিকসংখ্যক বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেয়ায় কমনওয়েলথ এই উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির সেক্রেটারি জেনারেল প্যাট্রিশিয়া স্কটল্যান্ড। আন্তর্জাতিক এই সংস্থাটি বাংলাদেশের পাশে থাকার ঘোষণাও দিয়েছে।
লন্ডনে তার অফিস থেকে সরকারি বার্তা সংস্থা বাসসের সঙ্গে একান্ত ভার্চুয়াল সাক্ষাৎকারে প্যাট্রিশিয়া বলেন, কমনওয়েলথ সচিবালয় আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় আইনি লড়াইয়ে গাম্বিয়াকে সহায়তার জন্য সংস্থার সদস্য দেশগুলো থেকে আইনজীবীদের একটি বড় টিম গঠনের সম্ভাবনা পর্যালোচনা করে দেখছে।
স্কটল্যান্ড বলেন, কমনওয়েলথের সদস্য কানাডা আইসিজেতে আইনি লড়াইয়ে গাম্বিয়ার সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। আর এক্ষেত্রে তার অফিস কমনওয়েলথে বিদ্যমান আইনবিদদের দিয়ে এই পদক্ষেপে সহায়তার পরিকল্পনা করেছে।
তিনি বলেন, ‘(একই সাথে) কমনওয়েলথ পরিবার এই ইস্যুতে বাংলাদেশের সাথে ‘পূর্ণ সংহতি’ নিয়ে দাঁড়িয়েছে এবং ২০১৩ সালে কমনওয়েলথ সরকার প্রধানদের বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশকে সহায়তা দিয়ে যাবে।
কমনওয়েলথের শীর্ষ নির্বাহী রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার ক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
গত সপ্তাহে লন্ডনে কমনওয়েলথ সচিবালয় এবং যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ হাইকমিশনের যৌথ উদ্যোগে একটি উচ্চ পর্যায়ের সংলাপের পরে স্কটল্যান্ডের এ মন্তব্য এসেছে।
মিয়ানমার ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট এক নির্মম সামরিক অভিযান শুরু করার পর দেশটির রাখাইন রাজ্যের ১.১ মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গা তাদের জন্মভূমি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়, যাদের বেশিরভাগ বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী কক্সবাজার জেলায় আশ্রয় নেয়।
গাম্বিয়া গত বছরের নভেম্বর মাসে ওআইসি, কানাডা ও নেদারল্যান্ডসের সহায়তায় আইসিজে-তে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে এ মামলাটি দায়ের করে। গত বছরের ১০-১২ ডিসেম্বর আইসিজে তার প্রথম শুনানি করে।
গত ২৩ জানুয়ারি আইসিজে ঐতিহাসিক সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং রুল দেয় যে এই মামলা চালানোর যথেষ্ট কারণ রয়েছে এবং মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ সুরাহা করে সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে।
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কমনওয়েলথের পরিকল্পনা ছাড়াও প্যাট্রিশিয়া স্কটল্যান্ড কোভিড-১৯ মহামারির কারণে বহু উন্নয়নশীল অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির হার বিপর্যস্ত হলেও বাংলাদেশের ইতিবাচক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে সাফল্যের জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।