ভৈরবে পল্লীতে হলুদ গালিচা, সরিষার বাম্পার ফলনের আশাবাদী

ভৈরবে পল্লীতে হলুদ গালিচা, সরিষার বাম্পার ফলনের আশাবাদী

এম আর ওয়াসিম, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ

কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরবে গ্রাম গুলোতে ফসলের মাঠে এখন সরিষা ফুলের হলুদ রঙের সমারোহ। মনে হয়  চারদিকে হলুদ গালিচা বিছিয়ে প্রকৃতি যেন বিশেষ কোন অতিথির জন্য অপেক্ষমান। সুন্দর এই মনোরম দৃশ্যের সাথে প্রকৃতি প্রেমী অনেকে ব্যস্ত হয়ে পড়েন সেলফিতে। এ নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখতে বাড়ছে প্রকৃতি প্রেমিদের আনাগোনা। হলুদ রঙের গালিচায় ছেয়ে আছে এখানকার পল্লী প্রকৃতি। এ নয়নাভিরাম দৃশ্য ভিন্ন রকম দোলা দিয়ে যায় মানুষের মনে।


এই মৌসুমে অন্য জাতের ফসল আশানুরূপ না হলেও কম খরচে কৃষকদের কে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান করে সরিষা চাষ। এ ফসলের বাম্পার ফলনের হাসি ফুটে চাষিদের মুখে। অন্তর্বর্তী সময়ে সরিষা চাষ করে উপযুক্ত মূল্য পাওয়ায় কৃষকরা অধিক হারে সরিষা আবাদের দিকে ঝুঁকছে। কৃষি সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছর কার্তিক মাসের শেষের দিকে সরিষা চাষ করা হয় এবং পৌষ মাসের মাঝামাঝি সময়ে তা কর্তন করা হয়।


সরিষা ফলন লাভ জনক দিক আলোচনা করে স্থানীয় এক কৃষক বলেন, সরিষার ফুল দিয়ে তৈরী হয় মজাদার ‘বরা’ ও পাতা দিয়ে ‘শাক’ রান্না করা যায়। সরিষা কর্তন শেষে গাছ শুকিয়ে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার কারণে এসব বিক্রি করেও মেলে বাড়তি অর্থ। তাছাড়া প্রতিমন সরিষা বাজারে বিক্রি করে পাওয়া যায় ১৮শ থেকে ২ হাজার টাকা। তাই সরিষা চাষে কৃষকদের আগ্রহ দিনদিন আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। 


গতকাল শনিবার সকালে কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের আদর্শগ্রামের জইল্লার বন্দে সরিষা চাষী সাইদুল হকের সাথে স্বরেজমিনে কথা হলে তিনি বলেন, বৃষ্টি না আসায় এবং ভাল আবহাওয়ার কারনে এবার সরিষার ফলন অনেক ভাল হয়েছে। বিগত কয়েক বছরেও সরিষার এমন ভাল ফলন হয়নি। গতবারের তুলনায় এবার দ্বিগুন সরিষা পাবো বলে আমি আশাবাদী। একই মতবাদ ব্যক্ত করেন কৃষক হুমায়ুন কবির।


সরিষার দাম নিয়ে মতামত ব্যক্ত করেন একই গ্রামের কৃষক মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন আমরা যদি এবার সরিষার ন্যায্য মূল্য পায়, তাহলে দ্বিগুন লাভবান হবো বলে আশাবাদী। আমি মাননীয় সরকারের নিকট দাবী জানায় এবার যেন আমরা সরিষার সঠিক দাম পাই।


এবিষয়ে উপসহকারী সহকারী কৃষিকর্মকর্তা চন্দন কুমার সূত্রধর বলেন ভৈরবে বারি সরিষা-৯, বারি সরিষা- ১৪, বারি সরিষা- ১৫, বারি সরিষা- ১৭ ও বিনা সরিষা-৪ দিয়ে আবাদ সম্পূর্ণ করা হয়েছে। বিভিন্ন জেলা থেকে কালিকাপ্রসাদে ২৫০ টি মো বক্স স্থাপন করা হয়েছে। এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও কৃষি অফিস থেকে নিয়মিত পরামর্শ প্রদান এবং মৌমাছি দ্বারা অতিরিক্ত পরাগায়ন ঘঠার ফলে সরিষার ১৫-২০% ফলন বেশী আশা করা যায়।


উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম বলেন, এবছর ভৈরবে ২২৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়ার কারনে এবার সরিষার বাম্পার ফলন পাওয়ার আশাবাদী। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার অধিক লাভবান হবে। তাছাড়া সরিষাগাছের পাতা ঝড়ে জমিতে পড়ে উৎকৃষ্ট জৈব সারে পরিনত হয় যা পরবর্তীতে বোরো মৌসুমে ইউরিয়া সার কম লাগে। তাই কৃষক ভাইদের সরিষা আবাদ করতে বেশী আগ্রহী। আগামীতে সরিষা আবাদ আরোও বৃদ্ধি পাবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন