যশোরের শার্শায় ইরি বোরো মৌসুম ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা

যশোরের শার্শায় ইরি বোরো মৌসুম ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা

 যশোরের শার্শায় কৃষকরা ইরি বোরো মৌসুম শুরুর বেশ আগে ভাগেই জমি প্রস্তুত ও ধানের চারা রোপণের কাজ শুরু করেছেন। প্রচণ্ড শীতকে উপেক্ষা করে তারা ভোরের সূর্য উকি দেয়ার আগেই চলে যাচ্ছেন মাঠে।

সারা দিন কঠোর পরিশ্রম করে সন্ধ্যায় বাড়িতে ফিরছেন। ধান চালের বাজার দর ভালো থাকায় আগাম ধান রোপণের কাজ শুরু করেছেন কৃষকরা।  শার্শায় প্রতি ইঞ্চি মাটি সব ধরনের ফসল উৎপাদনে বরাবরই বিখ্যাত। শাক সবজি, ভুট্টা, আখ, ফল ফলাদিসহ সব কিছুই উৎপাদন হয় এই উপজেলাতে।

তবে ধান পাট উৎপাদন হয়ে আসছে যুগযুগ ধরে। গত কয়েক বছরে ধানের কাঙ্ক্ষিত মূল্য না পেয়ে হতাশ কৃষক। কিন্তু বছর খানের হলো ধানের বাজার দর ভালো থাকায় চাষিরা আবারও ধান চাষে ঝুঁকে পড়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলাতে ২২ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে ইরি বোরো ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ।

উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার অধিকাংশ জমিতেই ইরি ধানের চাষ হয়। কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে।উপজেলার নিজামপুর ,ডিহি,লক্ষণপুর এলাকার বিভিন্ন গ্রামের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, চাষিরা এ বছর বেশ আগে ভাগেই ইরি ধান রোপণে মাঠে নেমে পড়েছেন।

ইতোমধ্যে ধান চাষ যোগ্য জমিতে চারা রোপণের ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা। কিছু কিছু এলাকার জমিতে ধান রোপণের কাজ প্রায় শুরু করা হয়েছে।কৃষকরা জানান, ইরি ধান একটি ব্যয় বহুল ফসল বলে ইতোমধ্যে পরিচিতি লাভ করেছে। কেননা ১ বিঘা জমিতে ধান লাগাতে যেয়ে রোপা থেকে শুরু করে কৃষকের ঘরে সেই ধান আসা পর্যন্ত ১৫ থেকে ১৭ হাজার টাকা ব্যয় হয়।

সে সময়ে ধানের বাজার দর যদি ভালো না হয় তাহলে কৃষকের পরিস্থিতি খুবই খারাপ হয়।স্থানীয় কৃষক শুকুর  হোসেন বলেন, চলতি মৌসুমে তিনি আড়াই বিঘা জিমতে ইরি ধান রোপণ করবেন। এরই মধ্যে ১ বিঘা জমিতে ধান রোপণ করা হয়েছে। সার কীটনাশক ও সেচের পানিসহ সব কিছুরই দাম বৃদ্ধি।

ধান উঠার সময় যদি কাঙ্ক্ষিত মূল্য (দাম) না পাই তাহলে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। এ অঞ্চলের চাষিরা মূলত বিআর-২৮, বাসমতী, সুভললতা ও সুপার মিনিকেট ধানের চাষ বেশি করেন। বাজারে এই ধানের চাহিদা বেশি থাকায় চাষও বেশি হয় বলে কৃষকরা জানান। ইরি চাষিরা বলেন, ইরি ধান চাষে কৃষককে বেশি শ্রম দিতে হয়। এতো পরিশ্রম শেষে কৃষকের ধান যখন ঘরে আসতে শুরু করে তখনই ধানের বাজারে ধ্বস নামে।

যে সময় কৃষকের ঘর থেকে ধান আড়তদারদের আড়তে চলে যায় তখন দাম হু হু করে বৃদ্ধি পেতে থাকে। ইরি ধান উঠা মৌসুমে এমন যাতে না হয়। তার জন্য সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন এ অঞ্চলের চাষিরা।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈাতম কুমার শীল বলেন, সব কিছু ঠিক থাকলে লক্ষ্য মাত্রায় বেশি ইরি ধানের চাষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। কৃষি অফিস ইরি মৌসুম শুরুর আগে থেকেই কৃষকদের সব ধরনের সহযোগী প্রদান করা হচ্ছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন