নারীরা রমজানের ভাংতি রোজা যেভাবে কাজা করবেন

নারীরা রমজানের ভাংতি রোজা যেভাবে কাজা করবেন

ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় মহিলাদের মাসিক ঋতুচক্রকে হায়েজ বলে, আর প্রসবপরবর্তী স্রাবকে নেফাস বলে। হায়েজ ও নেফাসগ্রস্ত নারীদের জন্য নামাজ আদায় ও রমজানের রোজা রাখা জায়েজ নেই। এমতাবস্থায় যদি কেউ রোজা রাখেন কিংবা নামাজ আদায় করেন, তা হলে তারা শরিয়তের বিরুদ্ধাচরণ করবে।

ইসলামি বিশেষজ্ঞগণ সবাই ঐকমত্যের ভিত্তিতে বলেছেন, ঋতুবতী নারীর রমজানের ভাংতি রোজাগুলো অন্য যে কোনো মাসে কাজা করে দিতে হবে এবং এ ক্ষেত্রে কোনো কাফফারা আদায় করতে হবে না।

নারীদের রমজানের ভাংতি রোজাগুলো রমজানের পর যে কোনো মাসে নিকটতম সময়ে কাজা করে দিতে হবে। তবে রমজানের পর পরই কাজা আদায় করতে হবে—এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই; বরং পরবর্তী রমজান শুরু হওয়ার আগে যে কোনো মাসে তা আদায় করা যায়।

এ মর্মে আম্মাজান আয়েশা (রা.)-এর বর্ণিত হাদিস বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি বলেন, ‘রমজান মাসে আমার যে রোজাগুলো ছুটে যেত পরবর্তী শাবান মাসের মধ্যেই আমি তা কাজা করে ফেলতাম।’ (বুখারি ও মুসলিম)

যদি কোনো নারী শরিয়তসম্মত কারণবশত রমজানে তার ভাংতি রোজাগুলো পরবর্তী রমজান আসার আগে কাজা করতে না পারে, তবে রমজানের পরবর্তী সময় সেই (পূর্বের রমজানের) রোজাগুলো তাকে অবশ্যই কাজা করে নিতে হবে।

হানাফি আলেমরা বলেন, যদি কোনো নারী রমজানে তার ভাংতি রোজাগুলো পরবর্তী রমজান আসার আগে কাজা করতে না পারে, তার জন্য ফিদিয়া আদায় করতে হবে না; তার এই বিলম্বের জন্য শরিয়তসম্মত কোনো ওজর থাকুক বা না থাকুক। শুধু কাজা করে নিলেই চলবে।

তবে এ ব্যাপারে ইমাম মালেক, শাফেঈ এবং আহমদ (রহ.) -এর মত হলো, যদি তার এই বিলম্বের পেছনে শরিয়তসম্মত কোনো কারণ থাকে, তা হলে পরবর্তী সময় রোজাগুলো শুধু কাজা করে নিলেই চলবে।

আর যদি এই বিলম্বের পেছনে শরিয়তসম্মত কোনো কারণ না থাকে, তা হলে পরবর্তীতে রোজাগুলো কাজা করার পাশাপাশি প্রতিটি রোজার জন্য তাকে ফিদিয়া আদায় করতে হবে।

ঋতুচক্রের কারণে রমজানের ছুটে যাওয়া রোজাগুলো পরবর্তীতে লাগাতার রাখাটা জরুরি নয়; বরং নবীজি (সা.) বলেছেন, ছুটে যাওয়া রোজা লাগাতার কিংবা মাঝখানে সময় নিয়ে নিজের সুবিধামত রাখা যাবে। (দারাকুতনী)

সুতরাং মহিলাদের মাসিক ঋতুচক্রের কারণে রমজানের ভাংতি রোজাগুলো অবশ্যই পরবর্তী বছরের রমজান আসার আগেই কাজা করে নিতে হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন