স্বামী-স্ত্রীর উচ্চতায় সবচেয়ে বেশি ব্যবধান হিসেবে গিনেস ওয়ার্ল্ড বুকে নাম লিখিয়েছেন জেমস এবং ক্লো লাস্টেড দম্পতি। ‘ভালোবাসা অন্ধ’ তাদের ভালোবাসা সেটা প্রমাণ করেছে।
যুক্তরাজ্য ও ভারতের গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, জেমস এবং ক্লো লাস্টেড যুক্তরাজ্যের একই শহরের বাসিন্দা। ৩৩ বছর বয়সী জেমস পেশায় অভিনেতা ও উপস্থাপক, অন্যদিকে ২৭ বছর বয়সী ক্লো পেশায় শিক্ষক। জেমসের উচ্চতা ৩ ফুট ৭ ইঞ্চি, অন্যদিকে তার স্ত্রী ক্লোর উচ্চতা ৫ ফুট ৫.৪ ইঞ্চি। তাদের মধ্যে উচ্চতার ব্যবধান প্রায় ২ ফুট (১ ফুট ১০ ইঞ্চি)।
জেমস বিরল ধরনের বামনরোগ ‘ডিসট্রোপিক ডিসপ্লেসিয়াতে’ আক্রান্ত। এই রোগ হাড় এবং তরুনাস্থির উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করে।
খর্বকৃতির কারণে জেমস ভাবতেন তিনি কোনোদিন বিয়ে করতে পারবেন না। যদিও তিনি চাইতেন অন্য মানুষদের মতো সম্পূর্ণ জীবনযাপন করতে। তিনি বলেন, ৩ ফুট ৭ ইঞ্চি উচ্চতা হাস্যকর মনে হতে পারে; কিন্তু অন্য একজন মানুষ যা করতে পারে, আমিও তা পরি- একটু ভিন্নভাবে।
এ দম্পতির মধ্যে দুই ফুট উচ্চতার ব্যবধান থাকলেও ভালোবাসার কোনো ব্যবধান নেই। ভালোবেসে তারা ২০১৬ সালে বিবাহ করেন। স্বামী-স্ত্রীর সর্বোচ্চ দূরত্বের রেকর্ড ভাঙ্গা জেমস-ক্লো দম্পতির অলিভিয়া নামে দুই বছরের এক কন্যাসন্তানও রয়েছে।
গিনেস বুকে নাম উঠার পর এই দম্পতি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের নজর কাড়েন। সংবাদমাধ্যমের কাছে তারা তাদের ভালোবাসার গল্প শেয়ার করেন। প্রথম সাক্ষাতের গল্প বলতেই হেসে ফেলেন এই দম্পতি।
খবরে বলা হয়, ২০১২ সালে জেমস তার নিজ শহরে অলিম্পিক টর্চ বহন করেন। এরপর তার কিছু বন্ধু ক্লোর সঙ্গে তার পরিচয় করিয়ে দেয়। ক্লো নিজের উচ্চতা অনুসারে অধিক উচ্চতার মানুষই পছন্দ করতেন। কিন্তু জেমসের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর তার পছন্দ পরিবর্তন হয়।
প্রথম দেখার হওয়ার পর তারা স্থানীয় একটি পানশালায় সাক্ষাৎ করেন জানিয়ে ক্লো বলেন, সত্যি বলতে মানুষ কী বলবে আমার সেই ভয় হতো। ওই সময় তিনি কার্ডিফে পড়তেন। এরপর তাদের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক হয়।
লোকে কী বলবে- এটার ব্যাপক সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও ২০১৩ সালের শেষনাগাদ তারা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেমিক-প্রেমিকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। এর সাত মাস পর তারা প্রথমবারের মতো নর্থ ওয়েলেসের একটি লেকে ভ্রমণ করেন। সেখানেই জেমস, ক্লোকে হাঁটুগেড়ে বিয়ের প্রস্তাব দেন। ক্লো খুশিমনেই তার প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান।
ক্লো লাস্টেড বলেন, আমাদের ভালোবাসার গল্প আমাদের নিজেদের এবং অন্যদের এটা শিখিয়েছে যে, বইয়ের কাভার দেখে আপনি বইকে বিচার করতে পারেন না।