বরিশালে ৪ ঘণ্টা পর বাস চলাচল শুরু, ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

বরিশালে ৪ ঘণ্টা পর বাস চলাচল শুরু, ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

বরিশাল নগরীর রূপাতলী বাস টার্মিনালে শ্রমিক ইউনিয়নের দুই গ্রুপের নেতাদের মারামারির ঘটনায় ৪ ঘণ্টা  বন্ধ থাকার পর বাস চলাচল শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে রূপাতলী বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, কোতোয়ালি থানা পুলিশ শ্রমিকদের নিশ্চিত করেছেন হামলাকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। এছাড়াও যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘবে দুপুর আড়াইটার দিকে যাত্রী নিয়ে বিভিন্ন রুটে বাস ছেড়ে যায়।

কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম জানান, মারধরের ঘটনায় শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার বাবু বাদী হয়ে সুলতান মাহমুদসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

জেলা বাস, মি‌নিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্র‌মিক ইউনিয়‌নের একাংশের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ শাহরিয়ার বাবু বলেন, শ্রমিকদের ওপর হামলার ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি করেছি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেফতার করতে হবে। অন্যথায় লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি দেওয়া হবে।

জেলা বাস, মি‌নিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্র‌মিক ইউনিয়‌নের অপরাংশের সভাপতি সুলতান মাহমুদ বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। মূলত যারা শ্রমিক নন তাদের দিয়ে সম্প্রতি একটি অবৈধ কমিটি ঘোষণা করেছে স্থানীয় কয়েকজন। তাদের কমিটি শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন পায়নি। কিন্তু শ্রমিক না হয়েও তারা কমিটি গঠন করে বাস টার্মিনালের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য নিজেরা মারামারি করে আমার ওপরে দায় চাপাচ্ছে।

জানা গেছে, জেলা বাস, মি‌নিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্র‌মিক ইউনিয়‌নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদের নেতৃত্বে সম্প্রতি শ্রমিক ইউনিয়ন ভেঙে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। নবগঠিত এই কমিটিতে সুলতান মাহমুদ সভাপতি এবং শফিকুল ইসলাম টিটুকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।

অন্যদিকে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ শ্রমিক লীগ নেতা পরিমল চন্দ্র দাসকে সভাপতি ও সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক (জিএস) আহমেদ শাহরিয়ার বাবুকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি কমিটি গঠন করে দেন। একই বাস টার্মিনালে দুটি কমিটি গঠন নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। বিরোধের সূত্র ধরে আধিপত্য বিস্তার করতে মাঝেমাঝেই উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে।

এরই সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সুলতান মাহমুদের কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সোহাগকে বাসস্ট্যান্ডে কাজ করতে বাধা দেন পরিমল চন্দ্র দাসের নেতৃত্বাধীন শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা। এতে উভয়ের মধ্যে প্রথমে ধাক্কাধাক্কি ও পরে মারামারি হয়। এতে লাইন সম্পাদক হান্নান মৃধার কপাল ফেটে যায়। যদিও উভয় শ্রমিক ইউনিয়ন থেকে দাবি করা হয়েছে- কমপক্ষে ছয়জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ-শোডাউন করে বাসস্ট্যান্ড দখলে নেন পরিমল চন্দ্র দাস ও আহমেদ শাহরিয়ার বাবুর নেতৃত্বাধীন শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ। এ ঘটনায় গোটা বাস টা‌র্মিনাল এলাকায় উত্তেজনা ছ‌ড়ি‌য়ে প‌ড়ে এবং বাস চলাচল বন্ধ হ‌য়ে যায়। এতে লকডাউন প্রত্যাহা‌রের পর প্রথম দি‌নেই যাত্রীরা ব্যাপক ভোগা‌ন্তি‌তে প‌ড়েন।

আপনি আরও পড়তে পারেন