কেরানীগঞ্জে রোড ডাকাত দলের সর্দারসহ আটক ৩

কেরানীগঞ্জে রোড ডাকাত দলের সর্দারসহ আটক ৩

ঢাকার কেরানীগঞ্জে রোড ডাকাত দলের সর্দার কসাই কামালসহ দলের ৩ সদস্যকে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র ও মােবাইল ফোনসহ আটক করেছে মডেল থানা পুলিশ।

চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে রুহিতপুর রামেরকান্দা রােড, মেকাইল-অগ্রখােলা, বেলনা, শুটকিটেক, কলাতিয়া, চেয়ারম্যান সালাম রােডসহ বিভিন্ন নির্জন রাস্তায় রাতের আধারে ডাকাতি করতো। দুর্ধর্ষ ডাকাত দলটি রাস্তায় গাছ ফেলে মােটর সাইকেল, সিএনজি, অটোরিকশা, ইজিবাইকসহ আরহী এবং পথচারীদের সর্বস্ব লুটে নিত। যাত্রীদের গাড়ী থেকে নামিয়ে তাদের পোশাক খুলে তাদেরকে বেধে পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে নিয়ে ফেলে তাদের নগদ টাকা, মােবাইল ফোন, ঘড়ি, মােটর সাইকেল, অটোরিকশাসহ সব লুট করে নিয়ে পালিয়ে যেত।

ডাকাতরা গত কিছুদিন ধরে বিশেষ করে কোরবানী ঈদকে সামনে রেখে উল্লেখিত এলাকাগুলােতে ধারাবাহিকভাবে এ ধরনের ডাকাতি করে আসছিল ।

দু’জন ভুক্তভোগী কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় অভিযােগ দায়ের করলে দুটি ডাকাতি মামলা রুজু হয়। এর একটি মামলার ঘটনাস্থল রামেরকান্দা মেকাইল অগ্রখােলা রােড অপর ঘটনাস্থল কলাতিয়া বেলনা শুটকিরটেক এলাকায় সংঘটিত হয় বলে জানা যায়। মামলা রুজুর সাথে সাথেই কেরানীগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ সর্বাত্মক তদন্ত শুরু করে। তদন্তের একপর্যায়ে ডাকাত দলের অন্যতম সদস্য সােহান ওরফে শাওন হাওলাদার (২৮) কে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন নেকরােজবাগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে শাওন সবকিছু স্বীকার করে এবং তার দেওয়া তথ্যমতে ডাকাত দলের অন্যতম সদস্য আসাদুল আকন (নয়ন) ( ২৭ ) কে জিনজিরা ঘাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে নয়ন এবং শাওন উভয়ই পুলিশকে জানায় যে, কামাল বেপারী ওরফে কসাই কামাল তাদের দলের নেতা এবং সকল ডাকাতির ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী। কামাল তাদেরকে অস্ত্র, টাকা ও পিকআপের যােগান দেয় এবং ডাকাতির মালামাল বিক্রি শেষে সবাইকে ভাগ বাটোয়ারা করে দেয়। তদন্তের এপর্যায়ে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কেরানীগঞ্জ সার্কেলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জের নেতৃত্বে একটি চৌকশ আভিযানিক দল ডাকাত কামালকে জিনজিরা ঘাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্যমতে তার রসুলপুর ভাড়া বাসা হইতে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত ৩ ডাকাতের নামের পূর্বে অনেক ডাকাতির মামলা আছে বলে তদন্তকালে জানা যায় ।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জিয়াউদ্দিন জিয়া জানান, গ্রেপ্তারকৃত ডাকাতরা জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে এবং তাদের তথ্যের ভিত্তিতে ডাকাতদলের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কেরানীগঞ্জ সার্কেল) শাহাবুদ্দিন কবির জানান, এই ডাকাত দলটি কেরানীগঞ্জবাসীর রাতের চলাচলের ক্ষেত্রে রীতিমত আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আমরা তথ্য-প্রযুক্তির সাহায়তায় ৩ জনকে ধরতে পেরেছি। অভিযান অব্যাহত আছে এবং অচিরেই অন্যান্যদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। আসামিদের আটকের ফলে কেরানীগঞ্জে জনসাধারণের রাত্রিকালীন চলাচল অধিকতর নিরাপদ হবে বলেও আশাবাদ এ কর্মকর্তার।

আপনি আরও পড়তে পারেন