ডেল্টার প্রভাবে জাপান-থাইল্যান্ড-মালয়েশিয়ায় সংক্রমণের রেকর্ড

করোনার অতি সংক্রামক ধরন ডেল্টার প্রভাবে জাপানের রাজধানী টোকিও, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। দেশগুলোর সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে করা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

শুক্র থেকে শনিবার- ২৪ ঘণ্টায় জাপানের রাজধানী টোকিওতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৫৮ জন। বিশ্বজুড়ে মহামারি শুরুর পর থেকে এই প্রথম টোকিওতে দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা ৪ হাজার অতিক্রম করল। এর বাইরে শনিবার জাপানে করোনা ‘পজিটিভ’ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ১০ হাজার ৭৪৪ জন।

এবারের অলিম্পিক আসরের আয়োজক দেশ হওয়ায় করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে জাপান সরকার। সর্বোচ্চ সংক্রমণের একদিন আগে, শুক্রবার টোকিও ও তার আশপাশের এলাকায় একমাসব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে টোকিও নগর কর্তৃপক্ষ; কিন্তু এর মধ্যেই দৈনিক আক্রান্তের হিসেবে রেকর্ড ঘটল টোকিওতে।

টোকিওর অলিম্পিক আয়োজক কমিটি অবশ্য জানিয়েছে, করোনার ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে বিভিন্ন দেশের অলিম্পিক খেলোয়াড় ও প্রতিনিধিদের চলাচলে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে এবং যারা সেসব বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করেছেন, তাদের অলিম্পিক স্বীকৃতি (অ্যাক্রিডিটেশন) প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কতজনের অলিম্পিক অ্যাক্রিডিটেশন প্রত্যাহার করা হয়েছে তা জানায়নি কমিটি।

এদিকে শনিবার দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়াতেও সর্বোচ্চ সংখ্যক দৈনিক আক্রান্তের ঘটনা ঘটেছে। দেশটির সরকারি তথ্য অনুযায়ী, শনিবার মালয়েশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ হাজার ৭৮৬ জন মানুষ।

গত দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে মালয়েশিয়ায় বাড়ছে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। করোনা মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ার অভিযোগে দেশটির প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের পদত্যাগের দাবিতে ইতোমধ্যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে।

দৈনিক সংক্রমণে রেকর্ড করেছে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অপর দেশ থাইল্যান্ডও। শনিবার মালয়েশিয়ার প্রতিবেশী এই দেশটিতে করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ১৮ হাজার ৯১২ জন যা, মহামারি ‍শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক শনাক্তের রেকর্ড, এছাড়া এ সময়সীমায় দেশটিতে মারা গেছেন ১৭৮ জন করোনা রোগী।

থাইল্যান্ডের সরকারি স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে থাইল্যান্ডে দৈনিক আক্রান্তদের ৬০ শতাংশই ডেল্টার প্রভাবে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন।

অবশ্য শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, ডেল্টার প্রভাবে বিশ্বজুড়ে দৈনিক আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৮০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত চার সপ্তাহ ধরে এই চিত্র দেখা যাচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউএইচও মহাপরিচাল আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘মহামারির বিরুদ্ধে গত দেড় বছরে অনেক কষ্টে যেসব সাফল্য অর্জিত হয়েছিল- ডেল্টার কারণে আজ সেসবের প্রায় সবই হুমকির সম্মুখীন। বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সহ্যের চরম সীমায় পৌঁছে যাচ্ছে।’

 

 

আপনি আরও পড়তে পারেন