মোবাইলে প্রেম-বিয়ে, ২৭ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলায় কারাগারে গেলেন স্ত্রী

মোবাইলে প্রেম-বিয়ে, ২৭ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলায় কারাগারে গেলেন স্ত্রী

মোবাইল ফোনে প্রথমে প্রেম। তারপর সেই মোবাইলের মাধ্যমেই সৌদি প্রবাসী মো. খোকনের সঙ্গে ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে নুরজাহান স্মৃতি নামে এক তরুণীর বিয়ে হয়। দেনমোহরের নিশ্চয়তার জন্য প্রবাসীর বড় ভাইয়ের ব্যাংক হিসাবের একটি চেক সুরক্ষা হিসেবেও রাখে কনের পরিবার। এরপরও স্মৃতি স্বামীর গ্রামের বাড়িতে থাকতে নারাজ। এরপর স্বামীকে বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে জেলা শহরের উপকণ্ঠে জমি কিনতে ১০ লাখ টাকা নেন নববধূ। এভাবেই বিভিন্ন অজুহাতে খোকনের কাছ থেকে ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি ওই ভুক্তভোগীর।

জানা গেছে, সৌদি থেকে গত জুন মাসে খোকন লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের চর জাঙ্গালিয়ার বাড়িতে আসেন। গেল মাসের ১৯ জুন সদর উপজেলার পশ্চিম লক্ষ্মীপুর এলাকায় মেয়ের বাড়িতে এসে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়েও সম্পন্ন করেন তারা। ওইদিন জোরপূর্বক স্মৃতির পরিবার খোকনের কাছ থেকে ৩০০ টাকার রেজিস্ট্রিকৃত স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামা নেয়। এতে স্মৃতিকে শারীরিক, মানসিক নির্যাতন করা যাবে না, ফোনে কথা বলতে বাধা না দেওয়া যাবে না এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কখনো খারাপ আচরণ না করাসহ কয়েকটি শর্ত উল্লেখ করা হয়।

এরআগে, ২০২০ সালের ১৩ নভেম্বর মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সৌদি থেকে ওই তরুণীকে বিয়ে করেন খোকন। আনুষ্ঠানিক বিয়ের পরেও স্মৃতিকে খোকন তার বাড়িতে তুলে নিতে চাইলে কালক্ষেপন শুরু করে তাদের পরিবার। এরমধ্যেই হঠাৎ করে ১৮ জুলাই স্মৃতি লক্ষ্মীপুর আদালতে উপস্থিত হয়ে খোকনকে তালাক দেন। এ ঘটনায় ২১ আগস্ট খোকনের বড় ভাই আবুল খায়ের মানিক বাদী হয়ে কমলনগর থানায় প্রতারক নুরজাহান স্মৃতিসহ ৭ জনের নামে প্রতারণা মামলা দায়ের করেন।

অন্য আসামিরা হলেন- সালেহ আহম্মদ, মো. ইব্রাহিম, জেসমিন আক্তার, মো. রিংকু, আলী হায়দার চৌধুরী প্রিয় ও ঘটক মো. শাহজাহান। এরমধ্যে ঘটক শাহজাহান ছাড়া অন্য ছয় আসামি ২৫ আগস্ট লক্ষ্মীপুর আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিন আবেদন করেন। আদালতের বিচারক ওই বধূকে কারাগারে পাঠিয়ে অন্য আসামিদের জামিন মঞ্জুর করেন। স্মৃতি জেলা কারাগারে রয়েছে। স্মৃতি সদর উপজেলার পশ্চিম লক্ষ্মীপুর এলাকার মৃত নুরনবীর মেয়ে। শুক্রবার (২৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় ভূক্তভোগী প্রবাসী, পুলিশের সঙ্গে কথা ও মামলার এজাহার সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

মো. খোকন বলেন, স্মৃতিকে আমার পছন্দ হওয়ায় সকল শর্তে রাজি হয়েছি। বিভিন্ন অজুহাতে আমার ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বিয়ের নামে তারা পরিকল্পিতভাবে প্রতারণা করেছে। কেউ যেন এমন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, এজন্য আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। এ বিষয়ে কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোসলেহ উদ্দিন গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, বিয়ের নামে স্মৃতি ও তার পরিবার প্রবাসীর সঙ্গে প্রতারণা করেছে। ছয় আসামি আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিন চেয়েছে। এরমধ্যে পাঁচজনকে আদালত জামিন দিলেও স্মৃতিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। স্মৃতি এখন কারাগারে আছেন।

 

 

আপনি আরও পড়তে পারেন