মালদ্বীপে বাংলাদেশিদের ‘বানানো’ মাঠে খেলবেন জামালরা

জামাল ভূঁইয়া-অস্কার ব্রুজন যখন প্রেস কনফারেন্সে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন তখন সোহেল-মহসিন মালে স্টেডিয়ামের ঘাস কাটায় ব্যস্ত। নিবিড় মনে মাঠের পর্যবেক্ষণ করছিলেন তারা। শেষ মুহূর্তে চলছিল মাঠে পরিচর্যা। এই পরিচর্যার কাজে নিয়োজিত প্রায় সবাই বাংলাদেশি।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে দুই মেশিন দিয়ে বক্সের আশে পাশে রোলার মেশিন দিয়ে ঘাস কাটছিলেন সোহেল ও মোহসিন। দুই জনই প্রায় এক দশক এই স্টেডিয়ামে কাজ করছেন। তাদের হাতে বানানো মাঠে খেলবে বাংলাদেশ দল। এতে রোমাঞ্চিত তারা, ‘মালদ্বীপের মাঠ হলেও এর পরিচর্যা আমাদের বাংলাদেশিদের হাত দিয়েই হয়। আমরাই এই মাঠের যত্ম করি।’

শুধু মাঠে নয় স্টেডিয়ামের আনুষাঙ্গিক কাজও করেন তারা, ‘মাঠের কাজই বেশি করা হয়ে থাকে। এছাড়া স্টেডিয়াম পরিষ্কার, মন্ত্রণালয় থেকে ফেডারেশনে চিঠি আনা নেয়াও করি’।

বাংলাদেশের মতো মালদ্বীপেও স্টেডিয়াম সরকারের অধীন। মাঠের দেখাশোনার দায়িত্বটা মালদ্বীপ ফুটবল এসোসিয়েশনের। বাংলাদেশি যারা স্টেডিয়ামে কাজ করছেন তারা মালদ্বীপে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের নিযুক্ত। মালে স্টেডিয়ামে নয় জন বাংলাদেশি কাজ করছেন।

বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের পরিচর্যা করেন চান্দু মিয়া। বাফুফে অনেক খাতে অনেক খরচ করলেও মাঠের খাত তেমন বরাদ্দ করে না। মালদ্বীপে মাঠ পরিচর্যা সম্পর্কে কুমিল্লার ছেলে সোহেল বলেন, ‘ঘাস কাটার উন্নত মেশিন ব্যবহার হয়। শ্রীলংকা, ভারত ছাড়াও অন্য দেশ থেকে সার এনে মাঠে দেয়া হয়। এছাড়া নিয়মিত পানি এবং অন্যান্য পরিচর্যা তো হয়-ই’। ঘাসের মাঠে বৃষ্টি হলেও কোনো সমস্যা হয় না বলে জানালেন মহসিন, ‘বৃষ্টি হলেও খেলা ভালোমতো চলে। পানি জমে না। দ্রুত শুকিয়ে যায়।’ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ উপলক্ষ্যে ১৫ দিনের বিশেষ পরিচর্যা করা হচ্ছে।

মালেতে সাধারণত বাংলাদেশিরা বিভিন্ন দোকানে কাজ করে। স্টেডিয়ামে কাজ করার সংখ্যা কম। স্টেডিয়ামে কাজ করার সুযোগ পাওয়া সম্পর্কে মহসিন বলেন, ‘আমার মামা আরেকটি স্টেডিয়ামে (ক্রিকেট) কাজ করেন। তার মাধ্যমে আমি ফুটবল স্টেডিয়ামে কাজ পেয়েছি। দোকানে কাজের তুলনায় এখানে কাজ অনেকটা সম্মানের এবং সম্মানীও কিছুটা ভালো।’

মালদ্বীপে জাতীয় দলের সফর তেমন হয় না। ২০১৬ সালে একটি প্রীতি ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে ০-৫ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। ওই ম্যাচে হারের স্মৃতি খুব কষ্ট দিয়েছিল তাদের, ‘নিজেদের তৈরি করা মাঠে আমাদের দেশের ছেলেরা এভাবে হারায় খুব খারাপ লেগেছিল’। সেই হারের কষ্ট খানিকটা লাঘব হয়েছে বসুন্ধরা কিংসের খেলায়, ‘কিছু দিন আগে বসুন্ধরা কিংস মালদ্বীপের ক্লাবকে (মাজিয়া) হারিয়েছে। তখন খুব ভালো লেগেছে।’

আগামীকাল বাংলাদেশ খেলবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। সোহেল-মহসিনদের আনন্দের উপলক্ষ্য এনে দিতে পারেন কিনা জামালরা সেটাই এখন দেখার বিষয়।

 

 

 

আপনি আরও পড়তে পারেন