নবাবগঞ্জের নয়নশ্রী ইউনিয়নে মাদকসেবীদের হামলায় যুবকের হাতের পাঞ্জা বিচ্ছিন্ন

নবাবগঞ্জের নয়নশ্রী ইউনিয়নে মাদকসেবীদের হামলায় যুবকের হাতের পাঞ্জা বিচ্ছিন্ন

ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় মাদক সেবনে বাঁধা দেয়ায় মাদকসেবীদের পরিকল্পিত হামলায় আনোয়ার হোসেন (২৩) নামের এক যুবকের হাতের পাঞ্জা কুপিয়ে বিছিন্ন করার ঘটনা ঘটেছে।

গত ৬ জানুয়ারি রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার নয়নশ্রী ইউনিয়নের শান্তিনগর গ্রামের কাঠ বাগান মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। এঘটনায় নবাবগঞ্জ থানায় ১০ জনের নামে মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) এবিষয়ে সংবাদকর্মীদের কাছে জানান আহত আনোয়ার হোসেনের বাবা ইউনূছ মোল্লা।

ইউনূছ মোল্লা জানান, গত ডিসেম্বর মাসে প্রতিবেশি তাজেল হোসেনের ছেলে বিয়ের অনুষ্ঠানে আকাশসহ কিছু বখাটে যুবক মদ পান করছিলো। এঘটনা ইউনূছ মোল্লা বখাটে আকাশের বাবা আইয়ুব আলীকে জানালে তিনি ছেলেকে শাসন করেন। পরে তিনিও ঐ আসরে গিয়ে মদপান করেন। তারা বেসামাল অবস্থায় একে অপরের সাথে মারপিটের ঘটনা ঘটা ঘটনায়। এসময় বিয়ে বাড়িতে থাকা আনোয়ার ঘটনাস্থলে আসলে তাকেও মারধর করা হয়। একপর্যায়ে আনোয়ার আকাশকে একটা ঘুষি দেয়। এতে আকাশ আনোয়ারের উপর ক্ষিপ্ত হয়েউঠে। ঘটনার কয়েকদিন পর স্থানীয় গ্রাম্য শালিসে আপস মিমাংসা করে দেয়া হয়। এরপরও তারা থেমে থাকেনি, স্থানীয় সন্ত্রাসী কাসেম আমার পরিবারের উদ্দেশ্যে হুমকি দিয়ে আসছিল আনোয়ারের পাঞ্জা কেটে নেয়া হবে।

ইউনূছ মোল্লা অভিযোগ করেন, ৬ জানুয়ারি রাতে স্থানীয় রজ্জব গাপলার বাড়ির মেলা থেকে বাড়ি ফিরছিল আনোয়ার ও তার বোন জামাই আমীন। পথে শান্তিনগর গ্রামের কাঠ বাগানে ওঁত পেতে ছিল সন্ত্রাসীরা। তারা কাঠ বাগান মোড়ে আসামাত্র সন্ত্রাসীরা তাদের উপর হামলা করে। তারা ধারালো অস্ত্র ও রড়, বাঁশ, লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। এসময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আনোয়ারের বাঁ হাতের পাঞ্জা বিচ্ছিন্ন করে আহত করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে আনোয়ার আহতাবস্থায় দৌড়ে বাড়ি ফিরে চিৎকার দিয়ে বোন জামাই আমীনকে বাঁচানোর আকুতি জানায়। আমীনকেও পিটিয়ে জখম করা হয়। পরিবারের লোকজন তাদের আহতাবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে ভর্তি করেন। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক আনোয়ারকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠান। আমীনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে আনোয়ার বর্তমানে নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন।

আহত আনোয়ার হোসেনের মা কান্দা জড়িত কণ্ঠে জানান, আনোয়ার আমার একমাত্র ছেলে। ওকে অনেক আদর যত্ন করে মানুষ করেছি। অত্যান্ত ভদ্র স্বভাবের ছেলে সে। এলাকায় ভাদ্র হিসেবে সবাই জানে। মাদকসেবী, সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ছেলের উপর হামলা করেছে। আমার ছেলের হাত বিচ্ছিন্নসহ কুপিয়ে আহত করেছে, আমি মা হিসেবে এ বরবরতার বিচার চাই।

এঘটনায় ৮ জানুয়ারি ইউনূছ মোল্লা বাদী নবাবগঞ্জ থানায় ১০ জনের নামে হত্যাচেষ্টা ও অঙ্গহানির মামলা করেন। ঐ রাতেই আইয়ুব আলী ও কাসেমকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেন থানা পুলিশ। পরে ১৩ জানুয়ারি মামলার আসামী লিটন, রাকিব, কাজল আদালতে জামিন নিতে গেলে আদালত তাদেরও জেল হাজতে পাঠান।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, নবাবগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক ভজন কুমার রায় জানান, মামলা হওয়ার পরপরই প্রধান দুই আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছিল। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ৫ আসামী জেল হাজতে রয়েছেন। বাকিদের গ্রেফতারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন