হেসেনপুরে বালুময় চরে সুন্দর সবুজ ফসল

হেসেনপুরে বালুময় চরে সুন্দর সবুজ ফসল
মাহফুজ রাজা,জেলা প্রতিনিধি,  কিশোরগঞ্জ ;
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে ব্রহ্মপুত্র ও আশেপাশের নদ-নদীর অববাহিকায় চরাঞ্চলের কৃষকরা আধুনিক প্রযুক্তি ও উন্নত বীজের ব্যবহার করে চাষাবাদ করছেন। চিকচিক বালুময় জমিতে সোনার ফসল ফলিয়ে তাদের জীবিকা নির্বাহ করছেন। সনাতন চাষাবাদ পদ্ধতির উপর নির্ভরশীল চরের খেটে খাওয়া মানুষগুলো উন্নত ও আধুনিক ব্যবস্থা প্রয়োগের মাধ্যমে কৃষির ব্যাপক উন্নয়নের স্বপ্ন দেখছে।
জানা গেছে, উপজেলার চরবিশ্বনাথ, সাহেবের চর, চরকাটিহারী গ্রামের মুজিবুর রহমান, সোহেল,খোকনসহ অনেকেই জানান, শহর থেকে উন্নতমানের বীজ যোগাড় করতে না পারায় এবং আধুনিক পদ্ধতি না জানায় চরের মাটিতে ফলনও ভালো হতো না। কিন্তু বর্তমানে সেচের ব্যবস্থা থাকায় উন্নত জাতের বীজ ও প্রযুক্তির পাশাপাশি উন্নত জাতের মরিচ,আলু,ভুট্টা, গম, সরিষা, সূর্যমুখী, চিনাবাদাম, টমেটো, মসুর ডাল, খেসারি ডাল, মুগ ডাল, মরিচ, পেঁয়াজ চাষ করা হচ্ছে। এখন মিষ্টি কুমড়া, লাউ, ভুট্টাসহ উন্নত জাতের নানা ধরনের ফসল ও সবজি উৎপাদন করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। চরের জমিতে বিভিন্ন ফসল চাষের পাশাপাশি গরু, ছাগল ভেড়া, মুরগি পালনে এগিয়ে এসেছে চরবাসী।
সরেজমিনে শনিবার (২২ জানুয়ারি) উপজেলার চরাঞ্চলগুলিতে ঘুরে দেখা যায়, সফলের সৌন্দর্যের লীলাক্ষেত্র। যে কারো প্রানে শিহরণ জাগানোর মত অবস্থা।
হোসেনপুরে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় চরাঞ্চলের কৃষকরা জানান, আগের চরাঞ্চলের কুচকুচে বালুময় জমিতে ফসল চাষ করে প্রকৃতিগতভাবে যা ফলন হতো তা দিয়ে কোনমতে জীবিকা নির্বাহ করতে হতো। কিন্তু বর্তমানের সেচের ব্যবস্থা থাকলেও উন্নত জাতের ধানের পাশাপাশি উন্নত জাতের ভুট্টা, গম, সরিষা, টমেটো চাষ করা হয়েছে। এতে ফলনও অনেক ভালো হওয়ায় চরাঞ্চলের কৃষকরা তাদের দুঃখ কষ্টের দিনগুলো পেছনে ফেলে আধুনিক চাষাবাদে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছে। নতুন ধরনের প্রযুক্তি ও চাষাবাদ প্রয়োগ করে উচ্চফলনশীল জাতের ফসল উৎপাদন করছে। এতে আধুনিক চাষাবাদে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছে।
উপজেলার সিদলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জনাব সিরাজ  উদ্দীন (এম এ) সাংবাদিক আশরাফ আহমেদ কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, প্রচলিত চাষাবাদ পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে আধুনিক প্রযুক্তি ও উন্নত মানের বীজ ব্যবহার করে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে টিকে থেকে চরাঞ্চলের মানুষ এখন স্বাবলম্বী হচ্ছে। নিজেদের বেঁচে থাকার তাগিদে বালুময় চরাঞ্চলে কৃষি ক্ষেত্রে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষির বিপ্লব ঘটিয়ে হোসেনপুরে আর্থসামাজিক ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়নে অবদান রাখছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা  কৃষিবিদ ইমরুল কায়েস জানান, চরাঞ্চলসহ উপজেলার দুই হাজার কৃষককে কৃষি প্রণোদনার আওতায় উন্নত জাতের বীজ ও সার প্রদান করা হয়েছে। বিশেষ করে চরাঞ্চলের কৃষকদের বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বিনামূল্যে সার প্রদানের পাশাপাশি লাভজনক ফসল চাষে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি বিভাগ পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। কৃষকরা গতানুগতিক চাষাবাদ থেকে সরে এসে চরাঞ্চলে আধুনিক পদ্ধতিতে উৎপাদিত ফসল ও সবজি বাজারে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন