হিন্দুদের কাশ্মির ছাড়া ঠেকাতে তৎপর মোদি সরকার

হিন্দুদের কাশ্মির ছাড়া ঠেকাতে তৎপর মোদি সরকার

সম্প্রতি নতুন করে জটিল হয়েছে কাশ্মিরের পরিস্থিতি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিশেষ প্যাকেজে কাশ্মিরে চাকরি পাওয়া প্রায় চার হাজার হিন্দু হুমকি দিয়েছেন, সরকার যদি তাদের নিরাপত্তা না দিতে পারে তাহলে তারা কাশ্মির ছেড়ে চলে যাবেন। নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি সামনে দাঁড় করিয়ে এমন হুমকি তাদের।

দৈনিক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে কাশ্মিরে অন্তত ১৬ জনকে হত্যা করা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে হিন্দুরা বলতে চান- আপাতত নিরাপদ কোনো জায়গায় তাদের নিয়ে যাওয়া হোক। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও শান্ত হলে তারা আবার কাশ্মিরে ফিরবেন।

আর পুরো বিষয়টাকে ভালো চোখে দেখছে না ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। দিল্লি থেকে জম্মু-কাশ্মির প্রশাসনকে এরই মধ্যে বার্তা দেওয়া হয়েছে যে, প্রয়োজনে প্রত্যন্ত অঞ্চলে কর্মরত হিন্দুদের জেলা সদরে বদলি করে নিয়ে আসা যেতে পারে। কিন্তু কোনও পরিবার যেন উপত্যকা ত্যাগ না করে।

কাশ্মির ছাড়তে চাওয়া এ হিন্দুরা যে শিবিরগুলোতে থাকেন সেগুলোর সামনের রাস্তা আটকে তাদের এলাকা ছাড়া ঠেকানোর চেষ্টা করেছে নিরাপত্তাবাহিনী।

বিজেপি সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় পণ্ডিতরা উপত্যকা ছাড়লে দেশে ও দেশের বাইরে বদনাম হবে নরেন্দ্র মোদি সরকারের। এমনটাই মনে করছে বিজেপি।

কাশ্মিরে বসবাসকারী হিন্দুদের একাংশ নিজেদের বাসস্থান ছেড়ে হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় পালিয়ে গেছেন বা যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন। হিন্দু পণ্ডিতদের দলবদ্ধভাবে এই এলাকা ত্যাগ রাজনৈতিকভাবে বিপাকে ফেলেছে মোদি সরকারকে।

সুযোগ লুফে নিয়ে বিরোধীরা। তারা বলতে শুরু করেছে, কাশ্মিরের হিন্দুদের নিরাপত্তা দিতে মোদি সরকার ব্যর্থ। সুর চড়া হয়েছে খোদ বিজেপি শিবির থেকেও। বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী হিন্দুদের নিরাপত্তা না দিতে পারায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পদত্যাগও দাবি করেছেন।

এমন পরিস্থিতিতে গতকাল বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বৈঠকে কাশ্মিরের পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শাহ। এ মাসের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার উপরে জোর দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

সাম্প্রতিক এ পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের হাত রয়েছে বলেও অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে বৈঠকে।

ভারতীয় গোয়েন্দাদের বক্তব্য- বেছে বেছে ওই হত্যাকাণ্ড চালিয়ে অস্থিরতা চালানোর কৌশল নিয়েছে পাকিস্তান। এর জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে স্থানীয়দের; যাদের বিশেষ কোনো প্রশিক্ষণ নেই। ফলে তারা সেনা ছাউনি বা সেনা কনভয়ে হামলার পরিবর্তে নিরস্ত্র নাগরিকদের বেছে নিচ্ছে হামলার জন্য। পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মির থেকে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।

জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসনকে দিল্লি জানিয়ে দিয়েছে, কোনোভাবেই যাতে হিন্দুরা পরিবার নিয়ে এলাকা না ছাড়েন, তা নিশ্চিত করতে হবে।

সূত্র : আনন্দবাজার।  

 

 

আপনি আরও পড়তে পারেন