সুনামগঞ্জে বন্যার আশংকা, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

সুনামগঞ্জে বন্যার আশংকা, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
হুমায়ূন কবীর ফরীদি, জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) স্টাফ রিপোর্টারঃ
ভারা বর্ষণ আর পাহাড়ী ঢলের পানিতে আবারো সুনামগঞ্জে বন্যার আশংকা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে সদর সহ চার উপজেলা নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। ৪পৌর সভায় ত্রাণ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে।
চলমান ভারী বর্ষণ আর উজান থেকে ধেয়ে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে সুনামগঞ্জের  সুরমা, কুশিয়ারা, যাদুকাটা, বৌলাই ও রক্তি নদীসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে আবারো বন্যার আশংকা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভপুর, তাহিরপুর ও দোয়ারাবাজার উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। আজ ১৪ ই জুন রোজ মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়,সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ জেলা শহরের ষোলঘর পয়েন্টে বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ক্রমান্বয়ে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে জেলা শহরের উত্তর আরপিননগর, বড়পাড়া, সাহেববাড়ী ঘাট ও পুরানপাড়া সড়ক বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে পড়েছে।
বিশ্বম্ভপুর – তাহিরপুর সড়কের শক্তিয়ারখলা ডুবন্ত সড়ক পানির নীচে তলিয়ে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে এবং বিশ্বম্ভপুর উপজেলা পরিষদ, ফতেহপুর ইউনিয়ন, দক্ষিণ বাদাঘাট সহ দুটি ইউনিয়ন এর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। দোয়ারাবাজার উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন এর নিম্নাঞ্চললে বসবাসকারী জনসাধারণ  বন্যা কবলিত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
বিশ্বম্ভপুর উপজেলার বাসিন্দা মোঃ শামীম আহমদ, দোয়ারাবাজার এর অলিউর ও তাহিরপুর উপজেলার রাজান সহ একাধিক ব্যাক্তি একান্ত আলাপকালে বলেন, গত মে মাসেও বন্যার কবলে পড়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়েছে। তার রেশ কাটতে না কাটতেই গত কয়েক দিন ধরে চলমান ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে যে হারে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে মনে হয় ভোগান্তি সীমা ছাড়িয়ে যাবে। ইতিমধ্যে আমরা নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়েছি। আর সামন্য পানি হলেই বসত ঘরে উঠে পড়বে। আমাদের এই দুর্দশা লাগবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করছি।
সিলেট আবহাওয়া অফিস এর আবহাওয়াবিদ সাঈদুর রহমান চৌধুরী জানান, আগামী তিন দিন সুনামগঞ্জ ও সুনামগঞ্জের উজানে টানা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। এতে ভারী বর্ষণ আর উজান থেকে ধেয়ে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে বন্যার আশংকা রয়েছে।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সামসুদ্দোহা জানান, টানা বর্ষণ আর উজান থেকে ধেয়ে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বিগত এক সপ্তাহ ধরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আজ ১৪ ই জুন সুনামগঞ্জ ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।তবে যে হারে পানি বাড়ছে তাতে মনে হয় বন্যা হতে পারে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে যাতে মোকাবিলা করা যায় সে লক্ষে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে আজ জেলা প্রশাসক এর সম্মেলন কক্ষে আগাম প্রস্তুতি সভা আহবান করা হয়েছে।
এদিকে গতকাল ১৩ ই জুন সোমবার সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক পৌর সভা ৭.৫ মেট্রিক টন, জগন্নাথপুর পৌর সভা ৫ মেট্রিক টন, দিরাই পৌর সভা ৫ মেট্রিক টন ও সুনামগঞ্জ পৌর সভাকে ৭.৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। চার পৌর সভাকে মোট ২৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন