গৃহবধূকে হত্যার পর লাশ আগুনে পোড়ানোর অভিযোগে, স্বামী ও দেবর আটক

গৃহবধূকে হত্যার পর লাশ আগুনে পোড়ানোর অভিযোগে, স্বামী ও দেবর আটক

রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা;

নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় শাপলা আক্তার (২৫) নামের এক গৃহবধূকে হত্যা করে লাশ আগুনে পোড়ানোর অভিযোগে স্বামী ও দেবরকে আটক করেছে পুলিশ।

আজ (২৮ জুলাই) শুক্রবার সকালে উপজেলার মোজাফরপুর ভূঁইয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর স্বামী মো. মাকলুকাত মিয়া (৩২) ও দেবর মোজাহিদ মিয়াকে (২৪) আটক করেছে পুলিশ।

নিহত শাপলা আক্তাররের ছোট ভাই শফিকুল ইসলাম অভিযোগ করেন বলেন, ‘আমার বোনকে ঐ নরপশুরা হত্যা করে লাশে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে তাঁর স্বামী মাকলুকাত মিয়া আমাকে ফোন করে বলেন, শাপলা অসুস্থ। আমরা এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’

নিহতের স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুই বছর আগে মাকলুকাত মিয়া বিদেশ থেকে নিজ গ্রামে চলে আসেন। আট মাস আগে তিনি একই উপজেলার মাসকা ইউনিয়নের কীর্তনখোলা গ্রামের মতিউর রহমানের মেয়ে শাপলা আক্তারকে বিয়ে করেন। কিন্তু শাপলাকে মাকলুকাতের পছন্দ না হওয়ায় বিয়ের পর থেকে তাঁকে নানাভাবে নির্যাতন করে আসছিল অভিযুক্ত স্বামী।

তারা আরও জানান, গত ঈদুল আজহার কয়েক দিন আগে মাকলুকাতের এক ভাগনে শাপলা আক্তারের বেশ কিছু স্বর্ণালংকার চুরি করে নিয়ে যায়। বিষয়টি শাপলা বুঝতে পেরে তাঁর স্বামীসহ পরিবারকে জানান। এ ঘটনার জেরে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আজ ভোরে মাকলুকাত ও তাঁর পরিবারের লোকজন শাপলার মাথায় শক্ত কিছু দিয়ে আঘাত করে মাথা থেঁতলে দেন। এতে প্রচুর রক্তপাত হয় ফলে শাপলা মারা যান। ঘটনা ধামাচাপা দিতে লোকজন জানাজানি হওয়ার আগেই তারা লাশে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়া হয়।

এরপর মাকলুকাত সকাল ছয়টার দিকে শাপলার ছোট ভাইকে মুঠোফোনে কল করে জানান, শাপলা গায়ে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। পাড়া প্রতিবেশীরা ঘটনাটি টের পেয়ে, পুলিশে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে মাকলুকাত মিয়া ও তাঁর ছোট ভাই মোজাহিদ মিয়াকে আটক করে এবং গৃহবধূর লাশটি উদ্ধার করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো। পরে বেলা পৌনে দুইটার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী হোসেন মুঠোফোনে বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গৃহবধূর স্বামী ও দেবরকে আটক করা হয়েছে। গৃহবধূর লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন