আন্তর্জাতিক যুদ্ধের পৃষ্ঠপোষকতা করছে পেপসিকো’

মার্কিন বহুজাতিক খাদ্য, স্ন্যাকস ও পানীয় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান পেপসিকোকে ‘আন্তর্জাতিক যুদ্ধের পৃষ্ঠপোষকের’ তালিকার অন্তর্ভুক্ত করেছে ইউক্রেনের জাতীয় দুর্নীতি প্রতিরোধ সংস্থা (এনসিপিএ)। গত শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) পেপসিকোকে যুদ্ধের পৃষ্ঠপোষক সংস্থার অন্তর্ভুক্ত করে এনসিপিএ বলেছে, ব্যবসা সীমিত করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্ত্বেও মার্কিন এই বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান রাশিয়ায় তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

পেপসিকো ছাড়াও আরেক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান মার্সকেও এই তালিকায় যুক্ত করেছে ইউক্রেন। এনসিপিএ বলেছে, রাশিয়ায় ব্যবসা সীমিত করে ফেলা, বিজ্ঞাপনী কার্যক্রম ও উৎপাদন স্থগিত করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্ত্বেও পেপসিকো ও মার্স তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। এর মাধ্যমে রাশিয়ার সরকারি বাজেটে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কর প্রদান করে আগ্রাসক দেশটির অর্থনীতিকে সমর্থন করছে তারা।

মার্কিন বহুজাতিক খাদ্য, স্ন্যাকস ও পানীয় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান পেপসিকো। বর্তমানে বিশ্বের দুই শতাধিক দেশে ব্যবসা করছে প্রতিষ্ঠান। এই কোম্পানির ব্র্যান্ডের বহরে রয়েছে লে’স ডরিটোস চিপস, চিটোস, গ্যাটোরেড, পেপসি-কোলা, মাউন্টেন ডিউ, কোয়াকার, সোডাস্ট্রিম এবং অন্যান্য খাদ্য, স্ন্যাকস ও পানীয়।

এমনকি পেপসিকোর উৎপাদিত লে’স চিপস রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর রেশনের তালিকায়ও পাওয়া গেছে। রাশিয়ায় এই কোম্পানির ব্যবসাও ফুলে-ফেঁপে উঠছে। নিট মুনাফার হিসেবে রাশিয়ায় খাদ্য, স্ন্যাকস ও পানীয় উৎপাদন খাতে চতুর্থ বৃহত্তম কোম্পানি পেপসিকো। দেশটিতে পেপসিকোর ১৯টি কারখানায় প্রায় ২০ হাজার কর্মী রয়েছেন।

এনসিপিএর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে পুরোমাত্রার আগ্রাসন চালানোর প্রথম বছরে পেপসিকোর রাশিয়া শাখার মুনাফা ২০২১ সালের তুলনায় প্রায় ৩৩৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৫২৫ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়। আর ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করায় রাশিয়ার সরকারি বাজেটে পেপসিকো প্রায় ১১৫ মিলিয়ন ডলার অর্থ দেয়।

রাশিয়ায় নিজেদের প্রতিষ্ঠানে ৫ শতাধিক কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞাপন দিয়েছে পেপসিকো। এনসিপিএ বলছে, কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বিদেশি কোম্পানিগুলো ক্রেমলিনকে বেকারত্ব ও এ সংক্রান্ত সামাজিক সমস্যার বোঝা থেকে মুক্ত করছে।

অন্যদিকে, ২০২২ সালে রাশিয়ায় নিজেদের ব্যবসা থেকে আরেক মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি মার্স প্রায় ৩৭৭ মিলিয়ন ডলারের নিট মুনাফা করেছে। যা তার আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৫৯ শতাংশ বেশি। এই কোম্পানিও তাদের ওয়েবসাইটে রাশিয়ায় শতাধিক কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞাপন ঝুলিয়ে রেখেছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চতুর্থ বৃহত্তম ব্যক্তিগত মালিকানাধীন কোম্পানি মার্স। এই প্রতিষ্ঠানের সুপরিচিত ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে রয়েছে স্নিকার্স, মিল্কি ওয়ে, টুইক্স, বাউন্টি, এমঅ্যান্ডএম ও হুইসকাস। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রাশিয়ায় নিজেদের ব্যবসা সীমিত করার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা রক্ষা করছে না মার্স।

ইউক্রেনের কর্তৃপক্ষ বলছে, রাশিয়ায় ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে ব্যবসা করছে মার্স। দেশটির অর্থনীতিতে মার্কিন এই প্রতিষ্ঠানের আড়াই বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ রয়েছে। বর্তমানে রুশ ভূখণ্ডে মার্সের ১০টি কারখানা চালু রয়েছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন