স্কুলে শিক্ষার্থীর বদলে ছাগল

স্কুলে শিক্ষার্থীর বদলে ছাগল

ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলের মণিপুর রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী টি রাধেশ্যাম  স্কুলের হালহকিকত জানতে কোনও আগাম বার্তা না দিয়েই পরিদর্শনে বেরিয়েছিলেন। সফরটা তিনি শুরু করেছিলেন মায়াং ইমফাল এবং ওয়াবাগাই বিধানসভা ক্ষেত্রের কয়েকটি স্কুলে অভিযানের মাধ্যমে। এই হঠাৎ অভিযানে যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে, তাতে বেজায় চটেছেন মন্ত্রী।
মন্ত্রীর অভিজ্ঞতাটা ঠিক কেমন?
স্কুলে শিক্ষার্থীর বদলে ছাগল
কোথাও স্কুল খোলা কিন্তু শিক্ষক নেই। কোথাও আবার শিক্ষক রয়েছেন তো ছাত্র নেই! তবে মন্ত্রীর জন্য আরও চমক অপেক্ষা করছিল পশ্চিম ইমফালের একটি স্কুলে। সেখানকার খেলাকং এলাকার একটি স্কুলে ঢুকে পড়েছিলেন কেমন পরিস্থিতি তা খতিয়ে দেখতে। কিন্তু এ কী! মন্ত্রী কিছুটা ধন্দে পড়েছিলেন, এটা আদৌ স্কুল তো! নথি অনুযায়ী স্কুলই বটে। তবে স্কুলে কোনও ছাত্র ছিল না, শিক্ষকদের উপস্থিতি তো টেরই পাওয়া যায়নি। স্কুলের ক্লাসরুমগুলো ফাঁকা, আর সেখানে চরে বেড়াচ্ছে ছাগলের দল। একের পর এক স্কুলে ঘুরেছেন রাধেশ্যাম। কিন্তু কোনও স্কুল থেকেই তার অভিজ্ঞতাটা খুব একটা সুখকর হয়নি। ওই এলাকারই আরও একটি স্কুলে ঢুকে অবশ্য প্রধান শিক্ষককে দেখতে পান। কিন্তু বাকি শিক্ষকদের টিকি খুঁজে পাওয়া যায়নি। কোথায় গেলেন অন্য শিক্ষকরা? এই প্রশ্নের জবাবে প্রধান শিক্ষক জানান, তারা কাজের জন্য বাইরে গিয়েছেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষকের জবাব সন্তুষ্ট করতে পারেনি মন্ত্রীকে। হুঁশিয়ারির সুরেই তিনি বলেন, যে সব শিক্ষকেরা স্কুলে আসছেন না, তাদের বিরুদ্ধে এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। খেলাকংয়ের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান,  পাঁচ বছর আগে ওই স্কুলে ২০০ ছাত্রছাত্রী ছিল। কিন্তু কোথায় গেল তারা? এ প্রশ্নের জবাব অবশ্য পাওয়া যায়নি। যেমন একটা স্কুল সরকারকে হিসেব দিয়েছিল ৩২ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। কিন্তু মন্ত্রী সেই স্কুলে গিয়ে দেখেন, স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি পুরোটাই মিথ্যা। ছিল মাত্র ২ জন শিক্ষার্থী।

স্কুলগুলির এই ছবি দেখার পর মন্ত্রীর মুখে শোনা যায়, ‘এটা সত্যিই বিরক্তিকর এবং দুঃখের বিষয় যে শিক্ষার্থীরা স্কুলে নেই। স্কুল ভবনগুলোর অবস্থা তথৈবচ। সরকার শিগগির ব্যবস্থা নেবে।’ প্রশাসনের একটা সূত্র বলছে, সমস্ত সরকারি অনুদান, দুপুরের খাবার, বই, স্কুলের পোশাক যাতে নিয়মিতভাবে পাওয়া যায় সে কারণেই স্কুলগুলো সরকারের কাছে ভুয়া খতিয়ান দিচ্ছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment