সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে ধান কাটার শ্রমিক সংকট 

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে ধান কাটার শ্রমিক সংকট 
মোঃ হুমায়ূন কবীর ফরীদি,জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:
জগনন্নাথপুরের নলুয়ার হাওর সহ ছোট-বড় সবকটি হাওরে এবার বোরো ধানের ফলন ভালো হয়েছে।হাওর গুলোতে কিছু বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। কৃষক- কৃষাণির মুখে আনন্দের হাসি ফুটে উঠেছে।জনমনে আনন্দ -উল্লাস বিরাজ করছে। হাওরে হাওরে পাকা ও আধা পাকা ধান মৃদূ বাতাসের আলিঙ্গনে দুলছে। মনোমুগ্ধকর পরিবেশ আর ধানের মৌ মৌ গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে।  উপজেলার কিছু সংখ্যক হাওরে আগুল্যা জাতের কিছু ধান কাটা শুরু হলেও অত্র এলাকায় দেখা দিয়েছে ধান কাটার শ্রমিক সংকট।
সুনামগঞ্জ জেলাধীন জগন্নাথপুর উপজেলার নলুয়ার হাওর সহ ছোট-বড় সবকটি  হাওর গুলোতে সবুজের ডগায় ধানের সোনালী রং আর মৌ মৌ ঘ্রান সর্বত্র  মনোমুগ্ধকর পরিবেশ তৈরী হলেও এখন পর্যন্ত ধান কাটার শ্রমিক যোগাড় করতে পারেননী কৃষকরা।শ্রমিকের সন্ধানে বিভিন্ন জেলায় খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। উপজেলার নলুয়ার হাওর এলাকার কলকলিয়া ইউনিয়নের বালিকান্দী নিবাসী  যদিও ধান কাটার কিছু শ্রমিক বিভিন্ন এলাকা থেকে ইতিমধ্যে এসেছেন। তা  তুলনামূলক ভাবে অনেক কম। যেখানে চাষাবাদকৃত জমির কৃষক (মালিক)এর ২০/ ২৫ জন ধান কাটার শ্রমিকের প্রয়োজন। উপজেলার নলুয়ার হাওর পাড়ের কৃষক কলকলিয়া ইউনিয়নের বালিকান্দী নিবাসী দীপু মিয়া বলেন জমির ধান কাটা শুরু করেছি পর্যাপ্ত সংখ্যক শ্রমিক না থাকায় শংকায় আছি।আকাশের যে অবস্থা কখন জানি কি হয়।একই অভিমত ব্যাক্ত করে অনেক কৃষক বলেন,ধান কাটার শ্রমিক এখনেো পাইনি।বিভিন্ন এলাকায় যোগাযোগ করছি।শ্রমিকরা আসার কথা বলেছে তাদের আশায় বুক বেধে আছি। ওরা আসলে মনে কিছুটা হলেও শান্তি পাব।কেননা ইতিমধ্যে কালবৈশাখী ঝড়-তুফান আর শিলা বৃষ্টি শংকিত করে ফেলেছে। অন্তরে ভয়,কখন জানি কি হয়।
কৃষকরা একান্ত আলাপকালে আরো জানান দেশের পাবনা,খুলনা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, রংপুর সহ তাহিরপুর উপজেলার লাউরগড় এলাকার শ্রমিক ধান কাটার কাজ করত। স্থানীয় ভাবেও গ্রুপে গ্রুপে বিভক্ত হয়ে ধান কাটে শ্রমিকরা। এসব শ্রমিকদের সাথে যোগাযোগ করেও শ্রমিক জোগাড় করতে পারছেন না বেশীর ভাগ কৃষক।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে কলকলিয়া ইউপি সদস্য তারা মিয়া বলেন, সর্দারগণ ধান কাটার শ্রমিক সংকট দেখিয়ে কৃষকদের কাছে বাড়তি মজুরি ও সুবিধা দাবি করছেন।উপজেলার হাওর পারের চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের চিলাউড়া গ্রামের কৃষক ডালিম মিয়া বলেন, আমি ৬ হাল বোরো জমি করেছি এখন পর্যন্ত ধান কাটার বেপারি বা শ্রমিক পাইনি। নেত্রকোণার এক পার্টির সাথে আলোচনা করেছি তারা ৬ শতটাকা থেকে ৮শত  টাকা দৈনিক মজুরী  চায়। সব সময় ৭ ভাগা ধানে ধান কাটলেও এখন বেপারি না পাওয়ায় বেশী টাকা দাবি করছে। শ্রমিক না পাওয়ায় দুশ্চিন্তায় আছি।
একদিকে শ্রমিক জোগাড়ের চেষ্টায় কৃষকরা বিভিন্ন জায়গায় ধরণা দিচ্ছেন অন্যদিকে তাদের কষ্টার্জিত ফসল ঘোলায় তোলার জন্য প্রস্তুতি সম্পন্ন করছেন। তারা ধান শুকানোর জন্য খলা তৈরী, মাড়াই মেশিন মেরামত করা, ধান বহন করার জন্য বস্তা, উড়া, দুছুন,  সহ গৃহস্থালির সকল উপকরণ ঠিকটাক করে রাখছেন কৃষকগণ।
উল্লেখ্য, বিগত বছর অকাল বন্যায় ফসল হানির পর কৃষককুলকে সারা বছর অনেক দু:খ কষ্টে দিনাতিপাত করতে হয়েছে। গত বছরের তুলনায় চলতি বছর  হাওর রক্ষা বেড়ীবাঁধ গুলো সময় মত ও সঠিক ভাবে হওয়ায় কৃষকরা কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment