সিসি টিভি ক্যামেরা বন্ধ করে ইয়াবার খোঁজ, ৫ পুলিশ ধরা

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় এক ব্যবসায়ীকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা ও মারধরের অভিযোগে গৌরীপুর থানার চার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই ) ও এক পুলিশ কনস্টেবলকে আটক করে বিক্ষোভ করেছে স্থানীয়রা।

গতকাল রোববার রাত ১০টার দিকে উপজেলার রামগোপালপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

পরে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিয়ে দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে জনতার হাতে অবরুদ্ধ হওয়া পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে নিয়ে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গৌরীপুর সার্কেল) সাখের হোসেন সিদ্দিকী।

স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার বলুহা গ্রামের খোকন মিয়া (৩০) ইয়াবা বিক্রি করেন-এমন অভিযোগে রোববার রাত ১০টার দিকে রামগোপালপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তার দোকানে গৌরীপুর থানার এএসআই  আবদুল আউয়াল, রুহুল আমিন, আনোয়ার হোসেন, কামরুল ও কনস্টেবল আল আমিন সাদা পোশাকে তল্লাশি শুরু করেন। এ সময় তারা ইয়াবার একটি পুটলি খুঁজে পাওয়ার দাবি করেন। এ ইয়াবার পুঁটলি তার নয় দাবি করে তাৎক্ষণিক খোকন এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে উপস্থিত লোকজনের সামনে তাকে মারধর করেন ওই পুলিশ সদস্যরা।

একজন নিরপরাধ মানুষকে মাদকদ্রব্য দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা ও মারধরের ঘটনায় ক্ষুব্দ হয়ে স্থানীয় লোকজন ওই পুলিশ সদস্যদের ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় এসআই রহুল আমিন ও কামরুল পালিয়ে গেলেও বাকি তিন পুলিশ সদস্যকে স্থানীয়রা বাজারের অটো-টেম্পু মালিক সমিতির ঘরে আটকে রাখে। এ ঘটনার প্রতিবাদে রাত সাড়ে ১০টা থেকে ২টা পর্যন্ত ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন স্থানীয়রা।

পরে রাত আড়াইটার দিকে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে অবরুদ্ধ হওয়া তিন পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গৌরীপুর সার্কেল) সাখের হোসেন সিদ্দিকীসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা।

ভুক্তভোগী খোকন মিয়া বলেন, ‘রোববার রাত ১০টার দিকে উল্লেখিত পাঁচজন পুলিশ আমার দোকানে মোবাইলে টাকা লোড করতে আসেন। এ সময় তাদের একজন আমাকে বলে, সাইড দাও আমরা তোমার দোকান তল্লাশি করব। একপর্যায়ে তারা তল্লাশির নামে দোকানের সিসি ক্যামেরার চার্জার খুলে ফেলে। আামি তখন সিসি ক্যামেরা ওপেন করে তল্লাশির জন্য তাদের কাছে অনুরোধ করি। কিন্তু তারা আমার অনুরোধ না রেখেই দোকানে তল্লাশি শুরু করেন।’

খোকন মিয়া আরও বলেন, ‘তল্লাশিকালে এক পুলিশ সদস্য দোকানের সামনের কাউন্টারে রাখা ইলেকট্রনিক তারের কয়েলের ভেতর থেকে প্লাস্টিকে মোড়ানো ইয়াবা বের করে আমার হাতে হাতকড়া পড়ান। আামি এটি সাজানো নাটক বলে প্রতিবাদ করলে তারা আমাকে মারধর করেন।’

এ বিষয়ে এএসআই আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ফ্লেক্সিলোড ব্যবসার পাশাপাশি ইয়াবা বিক্রি করার খবরে আমরা খোকনের দোকানে তল্লাশি করি। তল্লাশিকালে তার দোকানে একটি পুটলির মধ্যে ইয়াবা পাওয়া যায়। কিন্তু স্থানীয়রা খোকনকে ভালো লোক দাবি করে উল্টো আমাদেরই অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করে।’

এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গৌরীপুর সার্কেল) সাখের হোসেন সিদ্দিকী বলেন, ‘ঘটনার তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ হবে।’

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment