১১ ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস অভিযানে চুরি হওয়া ১৯ মাসের শিশু উদ্ধার

১১ ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস অভিযানে চুরি হওয়া ১৯ মাসের শিশু উদ্ধার

১১ ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস অভিযানে কুমিল্লা থেকে চুরি যাওয়া ১৯ মাসের শিশু রাইসাকে উদ্ধার করেছে কুমিল্লা জেলা পুলিশের একটি বিশেষায়িত দল। মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) পুলিশ সদর দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

গত বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কুমিল্লার তিতাস থানা পুলিশ সংবাদ পায় যে তিতাসের উলুকান্দি গ্রামের এক বাড়ি থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা সিঁদ কেটে দুটি মোবাইল ও ১৯ মাস বয়সের এক শিশুকে চুরি করে নিয়ে গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জান্নাত আক্তার (২৫) তার ১৯ মাস বয়সী শিশু কন্যা রাইসাকে নিয়ে তিতাসের উলুকান্দি গ্রামে বসবাস করতেন। তার স্বামী মো. হালিম দীর্ঘ দিন ধরেই প্রবাসে আছেন। ঘটনার আগের রাতে প্রতিদিনের মতোই রাইসাকে নিয়ে জান্নাত আক্তার নিজ ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন। এরপর রাত সাড়ে ৪টার দিকে তিনি ঘরের বাইরের শৌচাগারে যান।

কিছুক্ষণ পর ঘরে ফিরে এসে তিনি দেখতে পান যে বিছানায় তার সন্তান নেই। এমনকি ঘরের কোথাও তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এমন সময় তিনি দেখতে পান যে ঘরের এক পাশে সিঁদ কাটা। জান্নাত আক্তার তাৎক্ষণিক বুঝে যান যে তার আদরের সন্তানেকে কেউ চুরি করে নিয়ে গেছে। সন্তানের সম্ভাব্য বিপদের আশঙ্কায় তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েন।

কিছুক্ষণের মধ্যেই অপরাধীরা চুরি করে নিয়ে যাওয়া শিশুকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। তারপর থেকে তারা কিছুক্ষণ পর পরই ভিকটিম শিশুর মা ও চাচার কাছে টাকা চেয়ে ফোন দিতে থাকে। 

ওই ঘটনার সংবাদ পাওয়ার পর চুরি যাওয়া শিশুটিকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করতে দ্রুত মাঠে নেমে পড়ে তিতাস থানা পুলিশ। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সার্কেল অফিসারের নেতৃত্বে যোগ দেয় কুমিল্লা জেলা পুলিশের একটি বিশেষায়িত দল।

অভিযানে নেমে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পুরো বিষয়টি সমঝোতা করছিল সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যরা। তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে কোনো প্রকার ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই শিশুটিকে উদ্ধার করা।

তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অপরাধীদের গতিবিধি ও অবস্থান নির্ণয় করার পাশাপাশি বিভিন্ন পুলিশি কৌশল অবলম্বন করে চলতে থাকে উদ্ধার অভিযান। অবশেষে সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটে তিতাস থানাধীন বলরামপুরের এক চর থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করাসহ একজনকে গ্রেফতার করা হয়। 

কিন্তু ততক্ষণে তীব্র শীতে শিশুটির শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত নাজুক হয়ে পড়ে। তাই তাকে দ্রুত তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। কিছুক্ষণ পর শিশুটির শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিক হলে তাকে তার মায়ের কোলে তুলে দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় তিতাস থানায় একটি মামলা হয়েছে এবং গ্রেফতার আসামিকে কোর্টে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

আপনি আরও পড়তে পারেন