পুরুষশূন্য গ্রাম, আদায় হয়নি জুম্মার নামাজ, মেলেনি সাপ্তাহিক বাজার!

পুরুষশূন্য গ্রাম, আদায় হয়নি জুম্মার নামাজ, মেলেনি সাপ্তাহিক বাজার!

পিরোজপুরের নাজিরপুরে ইউপি নির্বাচনী সহিংসতায় গ্রেফতার আতঙ্কে শুক্রবার (২৫ জুন) ঐতিহ্যবাহী সাতকাছিমা মাদরাসার কেন্দ্রীয় মসজিদ সহ এ গ্রামের আরো ছোট বড় ৮টি মসজিদে আদায় হয়নি জুমার নামাজ। ঘটনার দিন থেকেই বন্ধ রয়েছে বাজারের সমস্ত দোকান পাট।

এমনকি গত বৃহস্পতিবারও মেলেনি সাপ্তাহিক বাজার। অস্থায়ী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা অদূরে শাখারীকাঠীতে বাজার স্থানান্তর করে। অত্র অঞ্চলের মানুষ বেশির ভাগ শ্রমজীবি হওয়ায় এবং গ্রামটি পুরুষশূন্য হয়ে পড়ায় মানবেতর জীবন যাপন করছে এলাকার সাধারণ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। এলাকা জুড়ে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। মহিলারাও গ্রেফতার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।

ঐতিহ্যবাহী সাতকাছেমিয়া মাদরাসা মসজিদে গ্রেফতার আতঙ্কে মুসল্লিদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। মসজিদে জুম্মার নামাজে মুসল্লি হয়েছেন ঈমাম, মুয়াজ্জিম খাদেম সহ মাত্র ৫ জন

জামিয়া আরাবিয়া সাতকাছেমিয়া মসজিদের ঈমাম আবুল বাশার জানান, নাজিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আশরাফুজ্জামান সাহেব নির্দেশ করেছেন আপনার এই মাদরাসা ক্যাম্পাসের ভিতরে এ গ্রামের স্থানীয় কিংবা বাহিরের কেউ থাকতে পারবে না।

মাটিভাঙ্গা ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক মোঃ জাকির হোসেন জানান এই গ্রামটি এখন সম্পূর্ণ পুরুষ শূন্য। কাউকেই বাড়িতে পাবেন না। কারো বাড়িতে বাজার নেই, অনেক পরিবার করুণ অবস্থায় দিন অতিবাহিত করছে। আমার বাড়িতে ৯ জন পুরুষ আমি ছাড়া একজনও নেই।

স্থানীয় সচেতন মহলের দাবি এ ঘটনায় শুধু যারাই অভিযুক্ত তাদেরকেই আইনের আওতায় আনা হোক, অযথা যেন নির্দোষ নিরীহ ব্যক্তিরা হয়রানীর স্বীকার না হয় এ ব্যপারে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করছে।

নাজিরপুর থানার ওসি (তদন্ত) মাহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে আমরা এ পর্যন্ত মোস্তফা মৃধা (৫০), মাসুম মৃধা (৪০), রাকিব শেখ (৩০), এবং হায়দার মোল্লা (৫০) এই চারজনকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করে ৭ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

গত ২১ জুন ইউপি নির্বাচনের রাত ৮টার দিকে নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা নিয়ে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষকারীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও বিজিপি সদস্যদের বহনকরা তিনটি গাড়ি ভাংচুর করে। এতে পুলিশ সদস্যসহ ১৫ জন আহত হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে গুলি ও টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে।

আপনি আরও পড়তে পারেন