লালমিরহাটে আমনের চারা সংকট, দুশ্চিন্তায় কৃষক

লালমিরহাটে আমনের চারা সংকট, দুশ্চিন্তায় কৃষক
সাধন রায় লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ
 লালমনিরহাটের বন্যাকবলিত এলাকা থেকে পানি নেমে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত খেতে আবার আমনের চারা রোপণের চেষ্টা করছেন কৃষকরা। কিন্তু, কোথাও চারা সংকট এবং কোথাও চারার দাম বেশি হওয়ায় তারা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
লারমনিরহাট জেলা, তিস্তা, ধরলা,  নদীর চরাঞ্চল ও তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে প্রায় ১৬ হাজার হেক্টর জমির আমন খেত বন্যার পানিতে নিমজ্জিত ছিল।
লালমনিরহাট সদর  উপজেলার তিস্তা বন্যাদুর্গত কৃষক জহির আলী বলেন, ‘চার বিঘা জমির আমন খেত ১৫ দিন পর্যন্ত পানিতে নিমজ্জিত ছিল। প্রায় ৮০ শতাংশ আমনের চারা সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
‘নতুন করে আমনের চারা সংগ্রহের চেষ্টা করছি। কিন্তু, এখনো কোথাও তা পাইনি,’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘যদি আমনের চারা পাই তাহলে আবার ধান লাগাতে পারবো। চারা না পেলে এ বছর জমি পতিত রাখতে হবে।’
সদর উপজেলার খনিয়াগাছ গ্রামের বন্যাদুর্গত উজির আলী  বলেন, ‘এক জায়গায় দুই বিঘা জমির আমন খেত ১৪ দিন বন্যার পানিতে নিমজ্জিত থাকায় সেগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। আরেক জায়গায় তিন বিঘার আমন খেত আট দিন পানিতে নিমজ্জিত থাকায় সেখানে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ চারার ক্ষতি হয়েছে,এখন আমরা আমনের চারা সংকটে আছি,।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার ধাইরখাতা গ্রামের কৃষক আফছার আলী  বলেন, ‘তিন বিঘা জমির আমন খেতের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। চারা সংকট থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত জমিতে আবার আমন চারা রোপণ করতে পারবো কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘কয়েকজন কৃষকের কাছে বাড়তি আমন চারা আছে। কিন্তু, তারা দাম বেশি চাচ্ছেন।’
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামিম আশরাফ  বলেন, ‘লালমনিরহাটে বন্যার পানি চার দিনের বেশি স্থায়ী না হওয়ায় ফসলের তেমন ক্ষতি হয়নি। তবে কিছু কিছু নিচু এলাকায় আমনের ক্ষেত ১২ থেকে ১৩ দিন নিমজ্জিত থাকায় সেগুলোর সামান্য ক্ষতি হয়েছে।’
 বলেন, ‘আশা করছি, আগামী তিন থেকে চার দিনের মধ্যে কৃষি বিভাগ আমনের ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করতে পারবে। যেসব এলাকায় আমনের খেত ১৬ দিন পর্যন্ত বন্যার পানিতে নিমজ্জিত ছিল সেসব এলাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে।’
‘যেসব এলাকায় আট থেকে ১০ দিন পর্যন্ত আমনের খেত পানিতে নিমজ্জিত ছিল সেসব এলাকায় আংশিক ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করি,’ যোগ করেন তিনি।
‘জেলায় এখনো ৬০০ থেকে ৭০০ হেক্টর জমির আমন বীজতলা আছে,’ উল্লেখ করে শামীম আশরাফ বলেন, ‘আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা ও ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে মন্ত্রণালয়কে জানাবো। সরকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কী সহায়তা দেবে তা এখনো জানানো হয়নি। আশা করছি, বন্যাদুর্গত কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত আমনের খেতে আবার চারা লাগাতে পারবেন।’
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করতে কৃষি বিভাগের লোকজন মাঠে কাজ করছেন বলে তিনি জানান।

আপনি আরও পড়তে পারেন