কলেজছাত্রকে পেটানোর পর তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ

কলেজছাত্রকে পেটানোর পর তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ
রিপন কান্তি গুণ,বারহাট্টা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি;
নেত্রকোণার বারহাট্টায় কথা কাটাকাটির জেরে মো. রিপন মিয়া (১৬) নামের  বাউসী অর্দ্ধচন্দ্র উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় (স্কুল এন্ড কলেজ) এর এইচএসসি প্রথম বর্ষের এক কলেজ ছাত্রকে পেটানোর পর কলেজের গেট থেকে তুলে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন এইচএসসি-২০২২ পরীক্ষার্থীর বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) আনুমানিক দুপুর ৩টার দিকে উপজেলার বাউসী ইউনিয়নে অবস্থিত বাউসী অর্দ্ধচন্দ্র উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে রাস্তার পাশে এই ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী মো. রিপন মিয়া উপজেলার বাউসি ইউনিয়নের পূর্বদত্তখিলা গ্রামের মো. মন্তাজ উদ্দিনের ছেলে। সে বাউসি অর্ধচন্দ্র উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থী রিপনের পিতা মো. মন্তাজ উদ্দিন জানান, গত সোমবার কলেজে আমার ছেলের সাথে বারহাট্টা সদরের এইচএসসি-২০২২ পরীক্ষার্থী কয়েজন ছাত্রের কথা কাটাকাটি হয়। তারা আমার ছেলের সাথে একই কলেজে পড়ে। কিন্তু তখন বিষয়টি আমরা তেমন গুরুত্ব দেইনি। তাই কলেজ কতৃপক্ষকে অবগত করি নাই। কিন্তু আজকে (মঙ্গলবার) আমার ছেলে রিপন কলেজের প্রথম বর্ষের বার্ষিক পরীক্ষা শেষে কলেজ থেকে বের হয়ে কলেজের সামনের রাস্তার দিকে আসলে বারহাট্টা সদর থেকে আসা (১০-১২) জন ছেলে মিলে আমার ছেলেকে মারধর করার পর জোর করে অটোরিকশায় তুলে অজ্ঞাত স্থানের দিকে নিয়ে যায়। পরে সম্ভাব্য সকল স্থানে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাই নাই।
পরে আনুমানিক রাত ৮টার দিকে মোয়াটি তালুকদার অটো- রাইস মিলের কাছে, গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়। পরে তাকে জরুরী ভিত্তিতে নেত্রকোনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পর ভুক্তভোগীর পরিবারসহ এলাকার লোকজন ছেলেকে উদ্ধার করে দেওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের উপর চড়াও হয় এবং তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে বারহাট্টা থানাপুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে এবং শিক্ষকদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
বাউসী অর্দ্ধচন্দ্র উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় (স্কুল এন্ড কলেজ) এর অধ্যক্ষ বলেন, ভুক্তভোগী ও অভিযুক্ত দু’জনেই আমার কলেজের ছাত্র। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। ঘটনাটি আমার প্রতিষ্ঠানের ভিতরে হলে, আমি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারতাম। কিন্তু ঘটনাটি প্রতিষ্ঠানের বাইরে হয়েছে, তাই আমি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারি নাই। ঘটনাটি সম্পর্কে  আমি  অবগত ছিলাম না। এতে আমার দ্বায়িত্বের কোন অবহেলা ছিল না। কিন্তু আমাকেসহ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রাখাতে আমরা শিক্ষকরা অপমানিত হয়েছি। যা হোক শিক্ষার্থীদের কাছে আমার নির্দেশ, এমন ঘটনার যেন আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ লুৎফল হক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, রিপন নামে এক কলেজ ছাত্রকে অপহরণের অভিযোগ পেয়েছি। মোবাইল ফোনে খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে অবরুদ্ধ শিক্ষকদের মুক্ত করে নিয়ে আসি। অভিযুক্তদরর বিরুদ্ধে লিখিত কোন অভিযোগ করা হয় নাই। লিখিত মামলা করা হলে, আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন